গর্ভাবস্থায় দূষিত বাতাস কতটা ক্ষতিকর?

শীত এলেই বাতাসে বাড়ে দূষণের পরিমাণ। প্রতিদিন সকালে মানুষ চোখ জ্বালাপোড়া, গলা চুলকানো, মাথাব্যথা এবং ক্রমাগত কাশি নিয়ে ঘুম থেকে উঠতে হয় অনেককে। যদিও এই পরিস্থিতি সবার জন্য সমস্যাজনক, তবে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। বিষাক্ত বাতাস ভ্রুণের বিকাশ এবং হবু মায়ের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক দূষিত বাতাস কীভাবে গর্ভাবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
১. অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়
দূষিত বাতাসে PM2.5 এবং PM10 এর মতো ক্ষুদ্র কণা থাকে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় রক্তে পৌঁছায়। এর ফলে প্রদাহ এবং স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়, যা গর্ভবতী মায়েদের অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের NICU-তে থাকতে হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী বিকাশ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যাও বেশি থাকে।
২. কম ওজন
বিষাক্ত দূষণকারী পদার্থ ভ্রূণের পুষ্টি এবং অক্সিজেন সরবরাহে বাধা দেয়। এর ফলে গর্ভের ভিতরে শিশুর বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হয়। কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুরা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, খাওয়াতে অসুবিধা এবং বিকাশে বিলম্বের মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়।
৩. গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি
দূষিত বাতাসের গুণমান রক্তনালীর ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত, যার ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। দূষিত বাতাসের সংস্পর্শে থাকা গর্ভবতী নারীরা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ বা প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার ঝুঁকিতে ভুগতে পারেন, যা সময়মতো পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসা না করালে জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে।
৪. গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি
বিষাক্ত দূষণকারী পদার্থের সংস্পর্শে যত বেশি থাকা হবে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম মাসগুলোতে, গর্ভপাতের ঝুঁকি তত বেশি হবে। সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইডের মতো পদার্থ ভ্রূণের রোপন এবং স্বাভাবিক হরমোন ভারসাম্যে সমস্যা করতে পারে।

৫. মায়েদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা
গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ফুসফুসের ক্ষমতা হ্রাস পায়। দূষিত বায়ু ব্রঙ্কাইটিস এবং হাঁপানিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, পাশাপাশি তীব্র বুকে জমাট বাঁধার কারণ হতে পারে, যার ফলে মা এবং শিশু উভয়ের জন্য উপলব্ধ অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়।