ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই দুই প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ!

115

তুরস্ক যখন রাশিয়া থেকে এস-৪০০ আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেছে, তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এদিকে, দেশ দুইটির মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের গণসংযোগ বিভাগ আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোগান দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় নিয়ে আলোচনা করতে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাবও দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ চুক্তিতে আবদ্ধ হতে তুরস্কের কোনো আপত্তি নেই জানিয়ে এরদোগান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি চায়, তাহলে এস-৪০০ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় যৌথভাবে কাজ করবে তুরস্ক। জানা যায়, এস ৪০০ একই সময়ে ৩৬টি লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এমনকি একই সময়ে ৭২টি মিসাইল ছুড়তে সক্ষম। এটি মাঝারি ও দূরপাল্লা আকাশ বিমান হামলা প্রতিরোধে সক্ষম। এস ৪০০ তে রয়েছে অতিরিক্ত শনাক্তকারী রাডার, টাওয়ার ও এন্টোনা পোস্ট যা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়া যায়। এর লক্ষ্যমাত্রা সর্বোচ্চ ৬০০ কিলোমিটার। যা ৫ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে মিসাইল শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে। এদিকে, আগামী ২৮ থেকে ২৯ জুন জাপানে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে তুর্কি রাষ্ট্রপতির গণসংযোগ বিভাগ।

সম্প্রতি তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার জানিয়েছেন, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য তুরস্ক তার দায়দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে। তুরস্ক এই পরিকল্পনা চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনো চলছে। হুলুসি আকার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং সিরিয়ার পূর্ব ফোরাত নদী নিয়ে আলোচনার উন্নতি হয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, তুরস্ক মার্কিন তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি মূল্যায়ন করেছে। আঙ্কারা এবং ওয়াশিংটন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের মূল্য, প্রযুক্তি হস্তান্তর, যৌথ উৎপাদন এবং সর্বশেষ অফার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক আলোচনা করছে।

এদিকে, বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিলের বিষয়ে তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে তার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। মার্কিন পদক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আমরা বিষয়টিকে চরমভাবে নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করছি। আমরা এ ধরনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য মনে করি।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুরস্ককে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এর মধ্যে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি বাতিল না করলে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে ওয়াশিংটন। এছাড়াও যদি তুরস্ক রাশিয়া হতে এস-৪০০ গ্রহণ করে তাহলে মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। তুরস্ক ১০০টি এফ-৩৫ বিমান কেনার অর্ডার দিয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোট থেকেও তুরস্ককে বহিষ্কার করা হতে পারে।