ক্ষতির মূখে ১৬ হাজার বিঘা জমির ফসল ও ৮,১১৫ জন কৃষক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে সেপ্টেম্বরে প্রথম দফার পর অক্টোবরের শুরুত্ইে দ্বিতীয়বারের মত বাড়তে শুরু করেছে পদ্মা,মহানন্দা,পূণর্ভবা সহ জেলার নদ-নদীগুলোর পানি। তবে জেলার সব নদীই এখনও বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার প্রধান নদী পদ্মা এই দফায় এখনও গত দফার সর্বোচ্চ বৃদ্ধি অতিক্রম না করলেও মহানন্দা ও পূণর্ভবা করেছে। এদিকে জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতও অব্যহত রয়েছে। গত দফার বৃদ্ধিতে পুরোপুরি বন্যা পরিস্থিতি সৃস্টি না হলেও সদর, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলার নদীতীরবর্তী বহু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয় বেশ কয়েক হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ হয় নদীতীরবর্তী নীচু জমির ফসল। চলতি দফায় জেলার আরও দুটি উপজেলা নাচোল ও ভোলাহাটের নি¤œাঞ্চলও মহানন্দা ও পূণর্ভবার পানিবৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এখন পর্যন্ত পানিবৃদ্ধিতে ক্ষতির মূখে ২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমির ফসল ও ৮ হাজার ১১৫ জন কৃষক। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও গোমস্তাপুরের রহনপুর পৌর এলাকার কিছু নীচু জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে।
পাউবো সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার বিপদসীমা ২২.০৫ মিটার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর পদ্মা সর্বোচ্চ ২১.৩০ মিটারে প্রবাহিত হয়। যা ছিল বিপৎসীমার ৭৫ সেমি নীচে। এরপর পদ্মা কমতে শুরু করে। গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ২০.৬৮ মিটার পর্যন্ত কমার পর গত বুধবার (২অক্টোবর) সকাল থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে। ৪ সেমি বেড়ে প্রবাহিত হয় ২০.৭২ মিটারে। আজ সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মা ২০. ৯৩ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ নতুন করে পদ্মা ২৫ সেমি বেড়েছে। বিগত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে ৮ সোিম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অপর প্রধান নদী মহানন্দার বিপদসীমা ২০.৫৫ মিটার। গত দফায় নদীটি ২৭ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৯.১৪ মিটারে প্রবাহিত হবার পর কমতে শুরু করে। ৩০ সেপ্টেম্বর নদীটি সর্বনি¤œ ১৯.০০ মিটারে প্রবাহিত হবার পর গত মঙ্গলবার থেকে আবার বাড়ছে। আজ সন্ধ্যায় নদীটি প্রবাহিত হচ্ছিল ১৯.২৮ মিটারে। বিগত ২৪ ঘন্টায় নদীটি ৬ সেমি বেড়েছে। যা গত দফার সর্বোচ্চ বৃদ্ধির তুলনায় ১৪ সেমি বেশি। জেলার অপর নদী গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্ণভবার পানি আজ সন্ধ্যা পর্য়ন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় ৮ সেমি বেড়ে ১৯.৮৮ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর বিপৎসীমা ২১.৫৫ মিটার। জেলা পনি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহি প্রকৗেশলী এস.এম আহসান হাবিব বলেন, উজানে ভারতে বৃষ্টিপাতই আবার এই বৃদ্ধি কারণ। দেশে ও জেলাতেও বৃষ্টিপাত বেড়েছে। আরও ২/৪ দিন পানি বাড়তে পারে। তবে এখনও বন্যার কোন পূর্বাভাস না থাকলেও আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
কৃষি বিভাগ জেলায় গত দফার বন্যায় ১ হাজার ৯৮৯ হেক্টর জমির ফসল ও ৬ হাজার ৮১০জন কৃষকের ক্ষতির হিসাব করেছিল ( ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। শুক্রবার রাতে জেলা কৃষ্টি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, মহানন্দা ও পূণর্ভবা নদীর পানি গত দফার চেয়ে এ দফা আরও বেশিতে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে ২৩৫.৫ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতির মূখে পড়েছেন আরও ১ হাজার ৩০৫ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের প্রায় ৯৫ শতাংশই মাসকলাই। তবে জনপ্রতিধিসহ বিভিন্ন সূত্র এই ক্ষতির পরিমান আরও অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন।