কাতার শর্ত না মানায় নাখোশ সৌদি আরব ও মিত্ররা

460

জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাসসহ ১৩ দফা শর্ত না মানায় কাতারের প্রতি ‘নাখোশ’ হলেও দেশটির ওপর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সৌদি আরব ও মিত্র আরব দেশগুলো।
বুধবার মিশরের রাজধানী কায়রোয় সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কাতারের বিরুদ্ধে চলমান অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞাই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কাতারকে শর্ত মানতে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার পর ওই চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে কায়েরোতে বৈঠকে বসে। এ বৈঠকে প্রতিবেশি দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু তা না করে বৈঠকে চলমান নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি বলেন, শর্তগুলোর বিষয়ে কাতার যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তা পুরোপুরি নেতিবাচক, সেখানে কিছুই নেই। কাতার তার নীতি থেকে সরে এসেছে এমন কোনো ইঙ্গিত পাইনি আমরা। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর বলেন, নীতি না বদলানো পর্যন্ত কাতারের ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ অব্যাহত থাকবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ এক টুইট বার্তায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, কাতার যদি শর্ত না মানে তাহলে দেশটিকে বড় ধরনের বিচ্ছিন্নতা ও ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। গারগাশ জানান, চার দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা এরপর বাহরাইনের রাজধারী মানামাতে একত্র হবেন। তবে কবে ওই বৈঠক হবে তা জানাননি তিনি। এদিকে বুধবার কাতার বলেছে, মিশর এবং উপসাগরীয় তিন দেশ তাদের ওপর পরিষ্কার আগ্রাসন চালাচ্ছে। একমাস আগে যেসব অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে এই চার দেশ সম্পর্কচ্ছেদ করেছিল, তা ছিল পশ্চিমা দেশগুলোতে কাতারবিরোধী অনুভূতি সৃষ্টি করার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থেকে করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে দেশটি। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি বলেছেন, তারপরও সঙ্কট নিরসনে দোহা ধারাবাহিকভাবে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাবে। কাতারকে দেওয়া চার দেশের ১৩ শর্তের মধ্যে আছে সংবাদ চ্যানেল আল জাজিরা বন্ধ করে দেওয়া, কাতারে অবস্থিত তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস করা। এসব শর্তের মধ্যে মিশরের ব্রাদারহুড এবং ফিলিস্তিনের হামাসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদেরকে সহায়তা বন্ধের কথাও বলা হয়েছে। এসব শর্তের তালিকাকে অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। চার দেশের শর্ত এবং পরবর্তীতে আরোপ করা অবরোধ কাতারের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছে দেশটির সরকার।