এপারের বাড়িঘর কেঁপে উঠল মিয়ানমারের বিস্ফোরণে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পর পর কয়েকটি বিকট বিস্ফোরণে এপারে বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর কেঁপে ওঠেছে। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিন থেকে পাঁচটি বিকট শব্দ শুনতে পান টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বাসিন্দারা। সীমান্ত এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, গত এক বছরে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে এমন শব্দ তারা কখনও শুনেননি। বিস্ফোরণের শব্দের পর অনেকেই আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক সীমান্ত এলাকার লোকজন এমন আতঙ্কের কথা প্রকাশও করেছেন। নাইক্ষ্যছড়ির ঘুমধুম থেকে টেকনাফ সদর পর্যন্ত বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ সদরের বাসিন্দা জাবেদ ইকবাল। ঘুমধুমের বাসিন্দা আজিজুল হক জানান, মিয়ানমারের বলিবাজারের এলাকা থেকে বিকট শব্দ ভেসে আসে। এসময় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আরাকান আর্মির ক্যাম্পে মিয়ানমার সরকারি বাহিনী গোলা বর্ষণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের বিস্ফোরণের শব্দটি অনেক বেশি ভয়াবহ। এমন শব্দ আর কখনও শোনা যায়নি। গোলার শব্দ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টার শেলের শব্দ শুনতে পেয়েছি। এসব গোলার শব্দ এখন নিয়মিত ঘটনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের গোলার বিকট শব্দ আগে পাওয়া যায়নি। যার ফলে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তে আগুনের কুণ্ডলী, যুদ্ধবিমানও দেখা গেছে। এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলার ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দে আমার বাসভবনও কেঁপে উঠেছে। সীমান্তের লোকজনের খোঁজ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি সীমান্তের আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছেন। এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে সীমান্তে কড়া পাহারায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ ইশতিয়াক মুর্শেদ।