এতিম শিশুদের সঙ্গে সপরিবারে জেলা প্রশাসক গালিভ খাঁন

72

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিশু পরিবার। আমরা যাকে বলি এতিমখানা। সেখানে নিবাসীরা সবাই শিশু। ওদের কারো মা কারো বাবা নেই। তাই তাদের আশ্রয় হয়েছে শিশু পরিবারে। তারা মা বাবার আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত। মা বাবার সেন্হমমতা ছাড়াই তারা বেড়ে উঠছে। তাই সমাজের আর দশটা শিশুর থেকে আলাদা ওদের জীবন। কিন্তু তাই বলে তাদের আদর যত্নের অভাব হয় না।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সমাজ সেবা কার্যালয় তাদের দেকভাল করে। বিশেষ দিবসগুলোতে জেলা প্রশাসক নিজেই উপস্থিত হয়ে শিশুগুলোকে খাইয়ে দেন। শুক্রবার ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। এদিন ওইসব শিশুদের জন্য উন্নতমানের খাবার রান্না করা হয়। দুপুরে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও তাঁর পত্নী লেডিস ক্লাবের সভাপতি মাহফুজা সুলতানা পরম মমতায় শিশুদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। অন্যরকম একটি দিন কাটিয়েছে এতিম শিশুরা। নিজেরাও সেখানেই দুপুরের খাবারটি খান।
উন্নত মানের খাবারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক নিজেই এতিম শিশুদের জন্য ৩২ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ, মিষ্টি, দইসহ নানা ধরনের খাবার নিয়ে যান। এত বড় মাছ পেয়ে সরকারি শিশু পরিবারের শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। এসময় সরকারি শিশু পরিবারের ৫ মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৭৮ হাজার টাকার মেধা বৃত্তি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও লেডিস ক্লাবের সভাপতি মাহফুজা সুলতানা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে সরকারি শিশু পরিবার। এ পরিবারে স্বজনবিহীন প্রায় শ’খানেক শিশু বেড়ে উঠছে। পড়ালেখার পাশাপাশ খেলাধূলার সুযোগও পাচ্ছে তারা।
এতিম শিশুদের মাঝে জেলা প্রশাসকের খাবার পরিবেশনের সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে কুলসুম, নেজারত ডেপুটি ক্যালেকটর (এনডিসি) মো. তৌফিক আজিজ, সহকারী কমিশনার তানজিনা শারমিন দৃষ্টি, সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক শাহনাজ পারভীন।
জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সরকার এসব শিশুর জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছে। তাদের খাবারের সময় গিয়েছিলাম। এই শিশুদের একটু খোঁজ খবর নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এটা শুধু সরকার বা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব নয়। সবাই যেন এগিয়ে আসে। বিত্তবানরা যদি তাদের সন্তানদের জন্মদিন এসব বাচ্চাদের নিয়ে পালন করে, তাতে ওদের অনেক ভালো লাগে।
লেডিস ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের পত্নী মাহফুজা সুলতানা জানান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ। তিনি হয়তো আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তিনি রয়েছেন আমাদের হৃদয়ে। তাঁর কাছে সবসময় শিশুরা খুব প্রিয় ছিল। ১৯৯৭ সালে এ জাতীয় শিশু দিবস প্রথম শুরু হয়েছিল। আমি আশা করবো তোমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলবে। তোমরা যারা আজকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মেধা বৃত্তি পেলে তাদের অভিনন্দন। তোমরা যারা এখানে আছো আগামীতে যেন তোমরা এ মেধা বৃত্তি পাও, সেই চেষ্টা করবে।