Site icon রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফএম

এতিমখানা দুর্নীতি : আবার বিচারক বদলের আবেদন খালেদার

ন্যয়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় চতুর্থবারের মত বিচারক বদলের আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া রোববার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেন। পরে খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী জমিরউদ্দিন সরকার ওই আবেদন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের বেঞ্চে উপস্থাপন করেন। হাই কোর্ট সোমবার এ বিষয়ে শুনানির দিন রেখেছে বলে জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী দলের সদস্য মাহবুবউদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে আদালত পরিবর্তনের আবেদন করা হয়েছে এই আবেদনে। জরুরি অবস্থার সময়ে দুদকের দায়ের করা এ মামলা বর্তমানে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিচারাধীন। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার মত এ মামলারও শুনানি চলছে বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা গত ২৭ জুলাই এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১১ সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে ৩ অগাস্ট পরবর্তী শুনানির দিন রাখেন। কিন্তু ওইদিন তার আইনজীবীরা আদালতকে জানান, চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনে গেছেন। মামলার বিচার কার্যক্রম চলার সময়ে লন্ডনে অবস্থান করায় সেদিন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের আবেদন করে দুদক। এ বিষয়ে সোমবার আদেশ হওয়ার কথা রয়েছে।
খালেদা জিয়ার আবেদনে এর আগেও তিনবার এ মামলার বিচারক বদলে দিয়েছিল হাই কোর্ট। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে, যাকে বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে দুদক। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ গত ৩ অগাস্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘তুচ্ছ’ বিষয় নিয়ে আসামিপক্ষ বারবার সময় নেওয়ায় মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে দুদক ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। কিন্তু পরে খালেদার আবেদনে হাই কোর্টের আদেশে এ মামলা বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয় আবু আহমেদ জমাদারকে। আসামিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন দেশের বাইরে। এছাড়া সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এ মামলায় আসামির আত্মপক্ষ শুনানি পর্যায়ে খালেদার অনাস্থার আবেদনে ৮ মার্চ হাই কোর্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লাকে (মহানগর দায়রা জজ) মামলাটির বিচারের দায়িত্ব দিয়ে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। কিন্তু কামরুল হোসেন মোল্লা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুদকের আইন শাখার পরিচালক ছিলেন এবং সে সময় তিনি এ মামলার বিষয়ে দুদককে মতামত দিয়েছিলেন- এই কারণ দেখিয়ে এপ্রিলে আবারও আদালত পরিবর্তনের জন্য হাই কোর্টে যান খালেদার আইনজীবীরা। ওই আবেদনের ওপর শুনানি করে হাই কোর্ট ১৪ মে আদালত বদলে দেওয়ার নির্দেশ দিলে মামলাটি ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে আসে। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অর্থের উৎস সম্পর্কিত অংশ পুনঃতদন্তের জন্যও উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু ২ জুলাই আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেয়।

Exit mobile version