এক রাতে গড় বৃষ্টিপাত ১৫ মি.মি. আম-বোরোর জন্য আশীর্বাদ

77

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গড় বৃষ্টি হয়েছে ১৫ মিলিমিটার। এছাড়া বুধবার মুশলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির সময় শহরে আসা মানুষসহ শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনায় পড়ে। ফাগুনের এই বৃষ্টিতে বোরো ধানের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। বৃষ্টিপাতের কারণে আপাতত সেচ থেকে রেহাই পেলেন কৃষকরা। যেসব জমিতে রোপণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে, সেগুলোর কাজও দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আমের জন্যও ভালো হয়েছে। যেসব গাছে গুটি এসেছে সেসব আমের জন্য এই বৃষ্টি অত্যন্ত ভালো হয়েছে। অন্যদিকে যেসব গাছে দেরিতে মুকুল এসেছে এবং যেসব মুকুলে এখনো পরাগায়ন হয়নি সেইসব আমের কিছুটা ক্ষতি হতে পারেÑ এমনটায় বলছেন কৃষক, কৃষি কর্মকর্তা ও আমবিজ্ঞানিরা। এছাড়া ক্ষেতে থাকা পেকে ওঠা গম ও মসুরের ক্ষতি হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেকর্ড করা তথ্য অনুযায়ী গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জেলায় গড় বৃষ্টি হয়েছে ১৫ মিলিমিটার। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩০, শিবগঞ্জে ৮, গোমস্তাপুরে ১৫, নাচোলে ২, ভোলাহাটে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বুধবার সারাদিনই বৃষ্টি হয়েছে। তবে সকাল ১০টার পর থেকে মুশলধারে বৃষ্টি হয়। হাল্কা বৃষ্টির মধ্যে বাজারঘাট করতে আসা শহুরে মানুষ আটকা পড়ে যান। আটকা পড়েন শিক্ষার্থীরাও। তাদেরকে ভিজে ভিজেই ঘরে ফিরতে হয়েছে। এই সুযোগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাওয়ালারা কিছুটা ভাড়া বেশিই হেঁকেছেন। তাড়াহুড়া করে মানুষকে ঘরে ফিরতে দেখা গেছে। ভারী বৃষ্টিতে রাস্তা উপচে জেলা শহরের ক্লাব সুপার মার্কেটের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় জেলা শহরের নিমতলা, বাতেন খাঁর মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায়।
শিবগঞ্জের আমচাষি ইসমাইল খান শামীম বলেন আমের জন্য খুবই ভলো হয়েছে এই বৃষ্টি। তবে দেরিতে মুকুল আসা গাছের হয়ত কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান বলেন আবহাওয়া যদি ঠিক হয়ে যায় এবং আর যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমের ক্ষতি হবে না। বরং লাভই হয়েছে, মাটিতে রস পেয়েছে। তবে আবহাওয়া ঠিক হয়ে গেলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে পারেন আমচাষিরা।
বোরোর জন্য এই বৃষ্টি আশীর্বাদ উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.পলাশ সরকার বলেন এই বৃষ্টির দরকার ছিল। যেসব আমগাছে গুটি হয়ে গেছে সেসব আমের জন্য ভালো হলো এবং যেসব গাছে দেরিতে মুকুল এসেছে, কিন্তু এখনো পরাগায়ন হয়নি, সেসব আমের হয়ত কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না, কি পরিমাণ ক্ষতি হবে। সবমিলিয়ে এই বৃষ্টি জেলার জন্য সুফল বয়ে এনেছে।