‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’

যে ক্ষণটার জন্য অপেক্ষা ছিল, যে সময়টার জন্য প্রতীক্ষা ছিল তার খুব কাছাকাছি ক্রিকেটাঙ্গন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যিনি টেস্ট ক্রিকেটের তিন অঙ্কে পৌঁছতে যাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টেই শততম টেস্টে মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর। সময় তাই যত ঘনিয়ে আসছে ততই মুশফিকুরকে ঘিরে বাড়ছে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা ও রোমাঞ্চ। যা ছুঁয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুরের কোচদেরও। যাদের সঙ্গে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া মাইলফলক ছোঁয়া এই সময়টা তিনি উপভোগ করুক প্রাণ খুলে। নিজের আনন্দে খেলুক। শুধু তা-ই নয়, একশ টেস্টেই যেন থমকে না যায় মুশফিকুর ব্যাট। অন্তত এক-দুই বছর তাকে টেস্ট অঙ্গনে দেখতে চান প্রত্যেকে।
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘আমাদের দেশে যারা টেস্ট খেলে তাদের টেস্টের সংখ্যা কম। এটা যদি ইংল্যান্ড হইতো বা অস্ট্রেলিয়াতে হতো বা ভারতেরও হতো, ওর যতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এতদিনে দেড়শ টেস্ট খেলে ফেলতো। সেই হিসাবে ইদানিং আমাদের একটু টেস্ট সংখ্যা বেড়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে। আগে তো অনেক কম হইতো। সেখান থেকে একশটা টেস্ট খেলা মানে বিশাল কিছু।’’
‘‘ওর সফরটা দেখেন আপনি। শুধু একশ টেস্ট বলবেন…ও কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এমন না যে অযথাই খেলছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিন্তু আপনার পারফর্ম করে খেলতে হয়। আপনি পারফর্ম ছাড়া থাকলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না।’’
‘‘মুশফিকুরকে তার পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে হয়েছে। আমাদের দেশের প্রথম একজন যে একশ টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এজন্য ও নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। ওই ক্ষুধাটা তার ছিল। ওই জেদটা তার ছিল। আমি আশা করব, যদি দলের চাহিদা থাকে এবং তারও খেলার ইচ্ছা তাহলে যেন আরো খেলা চালিয়ে যায়। আরো বেশিদিন মাঠে থাকে। মানে একশটা টেস্ট যেন শেষ না হয়।’’
মিজানুর রহমান বাবুল
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘মুশফিকুরকে শুভকামনা। একজন পারফেক্ট ব্যাটসম্যান। একজন পারফেক্ট স্পোর্টসম্যান। যাকে আপনি অনুসরণ করলে, যাকে আপনি মেনে চললে, আদর্শ ভাবলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট যেভাবে চলে, যে ধাঁচে এগিয়ে যায় সেখানে একজনের ক্যারিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে ২০ বছর টিকে থাকা মুশকিল। মুশফিকুর প্রমাণ করেছে যদি আপনার নিবেদন থাকে, ভালো করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি পারবেন।’’
‘‘ব্যাটসম্যান মুশফিকুর সব সময়ই বাংলাদেশ দলের সেরা। মিডল অর্ডারে লম্বা সময় বাংলাদেশকে সার্ভ করেছে। দেখুন তাকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ তাকে রিপ্লেস করতে পারেনি। পারফর্ম করেই সে টিকে আছে এবং খেলে যাচ্ছে। আমি চাই সে সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখুক। এখনো ফিট আছে। অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে। খেলার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এটা হয় না।’’
‘‘শততম টেস্টটায় সেঞ্চুরি লাগবেই, এমনটাই নয়। হলে ভালো। না হলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। থামলে হবে না। ওর অভিজ্ঞতাটা এই দলের প্রয়োজন এখন। যতদিন খেলতে মন চায় খেলুক। ও তো পারফর্ম না করে আর খেলবে না। তরুণ একজন ক্রিকেটার যদি তার ডেডিকেশন সম্পর্কে জানতে পারে সেটাই হবে বড় পাওয়া।’’