একদিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত: ১০ জনের মৃত্যু

80

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২৭৬৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা এ বছর একদিনের সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৩০ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ২৭৩১ জন রোগী। এতদিন সেটাই এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল। নতুন রোগীদের নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ৭৩২ জনে। অগাস্টের প্রথম ৬ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ৯০০ জন। মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে ৩১৩ জনের মৃত্যু হল। অগাস্টের প্রথম ছয় দিন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬২ জনের মৃত্যু হল। প্রতিদিন গড়ে ১০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে। বাংলাদেশে এর আগে কেবল ২০১৯ সালে এর চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছিল। আর মৃত্যুর সংখ্যা এবারই প্রথম ৩০০ ছাড়াল। ভর্তি রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।

রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরেই বেশি, ১৬৮৬ জন। আর ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১০৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। রোববার সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ৩৪৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৬০৫ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪ হাজার ৭৪২ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই। ভরা বর্ষায় জুলাই মাসে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।

জুলাই মাসের ৩১ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন রোগী, মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। এক মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা এ বছরের মোট সংখ্যার তিন চতুর্থাংশ। এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন এবং জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন এবং মে মাসে দুজন এবং জুনে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন, মারা যান ২৮১ জন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।