উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রটি দীর্ঘপাল্লার: যুক্তরাষ্ট্র

497

উত্তর কোরিয়া একটি দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।বিবিসি জানিয়েছে, কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের প্রতি প্রতি ‘হুমকি আরো ছড়িয়ে পড়া’ বলে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সতর্ক করে বলেছেন, “ওয়াশিংটন কখনোই পারমাণবিক অস্ত্রসজ্জিত উত্তর কোরিয়াকে মেনে নেবে না।”উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, তারা একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) সফল পরীক্ষা চালিয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াও সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে জবাব দিয়েছে।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন বলেছে, “সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানার নির্ভুলতা প্রদর্শন করার পরিকল্পনাতেই সম্মিলিত ওই সামরিক মহড়াটির আয়োজন করা হয়েছিল।”উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষাটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও দেশটির এখনও দীর্ঘ পাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতা নেই বলে ধারণা প্রকাশ করছেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা।
গত মঙ্গলবার দেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে একটি আইসিবিএম-র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এটিই তাদের দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম সফল পরীক্ষা বলে দাবি করেছে দেশটি। ক্ষেপণাস্ত্রটি জাপান সাগরে গিয়ে পড়ে।উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, “উত্তর কোরিয়া এখন পূর্ণ-শক্তির পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ। আমরা এখন সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম।
“এর মাধ্যমে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু যুদ্ধের হুমকি এবং ব্ল্যাকমেইল করার প্রবণতার ইতি টানতে পারব।”উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হওয়াসং-১৪ ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করেছেন বলেও জানানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি ২,৮০২ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে মাত্র ৩৯ মিনিটের মধ্যে ৯৩৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জলসীমায় গিয়ে পড়ে। এর আগে উত্তর কোরিয়ার কোনও ক্ষেপণাস্ত্র এত বেশি উচ্চতায় ওঠেনি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউনিয়ন কনসার্নড সায়েন্টিস্টের ডেভিড রাইট বলেছেন, “প্রতিবেদনগুলো সত্য হলে স্টান্ডার্ড ট্র্যাজেকটরি থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটির সর্বোচ্চ পাল্লা ৬,৭০০ কিলোমিটার হতে পারে।
“এই পাল্লা অনুযায়ী ক্ষেপণাস্ত্রটি আলাস্কায় পৌঁছতে পারবে, কিন্তু হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ বা যুক্তরাষ্ট্রের অপর ৪৮টি অঙ্গরাজ্যে পৌঁছতে পারবে না।” কোনো দেশ যদি উত্তর কোরিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে ও সামরিকভাবে সহায়তা দেয় ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ‘বিপজ্জনক একটি সরকারকে সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা করার’ দায়ে অভিযুক্ত হবে বলে সতর্ক করেছেন টিলারসন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে গতকাল বুধবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।