ইরাক-সিরিয়ায় মার্কিন হামলা

40

মার্কিন হামলায় ইরাকে বেসামরিক নাগরিকসহ কমপক্ষে ১৬ জন এবং সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত ২৩ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। ইরাকের সরকার, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি রাইটস এসব তথ্য জানিয়েছে। ইরাক তার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এই ‘নতুন আগ্রাসনের’ নিন্দা করেছে এবং এই অঞ্চলে ভয়াবহ পরিণতির জন্য সতর্ক করেছে। ইরাকের এক সরকারি মুখপাত্র শনিবার বলেছেন, বেসামরিক ও নিরাপত্তা—উভয় এলাকাকে লক্ষ্য করে বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে এবং ২৫ জন আহত হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে জর্দানে হামলায় মার্কিন সেনারা নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সংযুক্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার পর যুক্তরাষ্ট্র আরো প্রতিশোধমূলক হামলার সতর্ক করেছিল। ইরাকি সরকার বলেছে, ‘এই আক্রমণাত্মক হামলা ইরাক ও অঞ্চলের নিরাপত্তাকে অতল গহ্বরের দ্বারপ্রান্তে ফেলবে।’ পাশাপাশি বাগদাদের সঙ্গে বিমান হামলার সমন্বয়ের ওয়াশিংটনের দাবিকে ‘মিথ্যা’ ও ‘আন্তর্জাতিক জনমতকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে’ বলে অস্বীকার করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাতে বাগদাদে নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে পাঠায়। অন্যদিকে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘মার্কিন দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের’ নিন্দা করে বলেছে, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সিরিয়ার আরব সেনাবাহিনী ও তার মিত্রদের সক্ষমতা দুর্বল করার’ চেষ্টা করছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির মরুভূমি অঞ্চল এবং ইরাকের সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলার পর বেশ কয়েকজনের হতাহতের কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ার হামলায় অন্তত ২৩ ইরান সমর্থিত যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তবে এ সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। হামলাগুলো ইরানের ভূখণ্ডে সংঘটিত হয়নি। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এ হামলাকে ‘আরেকটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ এবং মার্কিন সরকারের আরেকটি কৌশলগত ত্রুটি’ বলে অভিহিত করেছে, যার ফলে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তীব্র করা ছাড়া আর কোনো ফল হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বহুস্তরীয়’ হামলার লক্ষ্য ছিল ইরান সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ বন্ধ করা, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করা নয়। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোমারু বিমান উড়িয়েছে এবং ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কর্পস এবং তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও কন্ট্রোল অপারেশন সেন্টার, ইন্টেলিজেন্স সেন্টার, অস্ত্র সংরক্ষণাগার এবং সরবরাহ চেইন সুবিধাকে লক্ষ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র দেশটির বেশ কয়েকটি স্থানে ছয়টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে।