ইয়েমেনে হুতিদের ওপর মার্কিন হামলায় নিহত ৩১
ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা রোববার জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিরুদ্ধে প্রথম মার্কিন হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে বলে দাবি করছে গোষ্ঠীটি।
অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠী যদি জাহাজে আক্রমণ বন্ধ না করে, তাহলে তাদের ওপর ‘নরকের কঠিন শাস্তি’ নেমে আসবে।
সানা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। বিদ্রোহী-অধিষ্ঠিত সানায় এএফপি’র এক আলোকচিত্রী বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখেছেন।
হুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল-আসবাহি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সানা, সাদা, আল-বায়দা ও রাদায় হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ১০১ জন আহত হয়েছেন, ‘যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু’। গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ও লোহিত সাগরের জাহাজে হামলা চালায় হুতিরা। তারা জানায়, গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের সংহতি রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প হুতিদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ‘অপ্রতিরোধ্য প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ’ করার প্রতিজ্ঞা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘সকল হুতি সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে বলছি, তোমাদের সময় শেষ। তোমাদের আক্রমণ আজ থেকেই বন্ধ করতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে তোমাদের ওপর নরকের কঠিন শাস্তি নেবে আসবে, যা তোমরা আগে কখনো দেখোনি।’
হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প এই গোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষককে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
তিনি ইরানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হুতি সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। আমেরিকার জনগণ, তাদের প্রেসিডেন্ট অথবা বিশ্বব্যাপী জাহাজ চলাচলের পথগুলোতে হুমকি সৃষ্টি করবেন না। যদি তা করেন, তাহলে সাবধান হয়ে যান। কারণ আমেরিকা আপনাদের সম্পূর্ণরূপে জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।’
হুতিরাও ‘প্রতিক্রিয়া দেখানো ছাড়া’ নিবৃত্ত না হওয়ার অঙ্গীকার করেছে। অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি নিহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তেহরানের পররাষ্ট্র নীতি নিয়ন্ত্রণ করার ‘কোনো কর্তৃত্ব’ ওয়াশিংটনের নেই।
হুতিদের আনসারুল্লাহ ওয়েবসাইটে এই হামলাকে ‘মার্কিন-ব্রিটিশ আগ্রাসন’ ও ওয়াশিংটনের ‘অপরাধমূলক বর্বরতা’ বলে অভিহিত করে নিন্দা জানানো হয়েছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড (সেন্টকম) যোদ্ধাদের ও একটি ভবন কম্পাউন্ড ধ্বংসকারী বোমার ছবি পোস্ট করেছে।
সেখানে তারা বলেছে, আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা, শত্রুদের নিবৃত্ত করা ও নৌ চলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে এই ‘নিখুঁত হামলা’ চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যও হুতিদের বিরুদ্ধে নিজস্ব হামলা চালিয়েছিল।