ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮

হুতি নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনে আফ্রিকান অভিবাসীদের আটক রাখার একটি কারাগারে মার্কিন বিমান হামলায় কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) হুতি পরিচালিত আল-মাসিরাহ টিভি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।  আল মাসিরাহ আরো জানিয়েছে, সা’দা প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ এই হামলায় ৪৭ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে একাধিক মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে এমন গ্রাফিক ফুটেজ পোস্ট করেছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। আল-মাসিরাহ টিভি এর আগে জানায়, রবিবার রাতে ইয়েমেনের রাজধানী সানার উত্তরাঞ্চলের বানি আল-হারিথ জেলার থাকবান এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ আটজন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি আমরান ও সা’দা প্রদেশেও যুক্তরাষ্ট্র রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানায়। আল-মাসিরাহ সর্বশেষ প্রতিবেদনে, সা’দা প্রদেশে মার্কিন বিমান হামলায় ৬৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানালো।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন বাহিনী গত ১৫ মার্চ থেকে হুতিদের ওপর বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করেছে। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে হুতিদের আক্রমণ বন্ধ করার লক্ষ্যে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে এই অভিযান বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার (২৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক অভিযানের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, ১৫ মার্চ ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে টানা বিমান ও নৌ হামলা শুরু করার পর থেকে তারা ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে অস্ত্রের মজুদ এবং উৎপাদন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তারা বলেছে, চলমান অভিযান সম্পর্কে ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ’ করা হবে না।  এদিকে হুতি গোষ্ঠী বলছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত তারা লোহিত সাগরের জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে এবং তাদের বাহিনী হামলার জবাব দেবে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে ইরান সমর্থিত হুতিরা। উত্তর ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই এখন তাদের দখলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে এর প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা ১০০ এর বেশি হামলা চালিয়েছে। এরপর হুতিদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে হামলা শুরু হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তাই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে আবারো হুতিদের ওপর হামলা জোরদার করার নির্দেশ দেন।