ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় মৃত বেড়ে ৪৪২, খাবার-পানির জন্য হাহাকার

ইন্দোনেশিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’ প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসের ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪২ জনে দাঁড়িয়েছে এবং প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার ৭০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই বিপর্যয়ের ফলে সুমাত্রার তাপানুলি অঞ্চলে খাদ্য ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে, যার কারণে বাসিন্দারা লুটপাটসহ চুরি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। খবর বিবিসির। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় এক সপ্তাহ আগে আঘাত হানা বিরল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’ প্রভাবে আচেহ, উত্তর সুমাত্রা ও পশ্চিম সুমাত্রায় টানা বর্ষণে ভয়াবহ ভূমিধস হয়েছে, ঘরবাড়ি ভেসে গেছে এবং হাজার হাজার ভবন ডুবে গেছে। সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দ্বীপের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বৈরি আবহাওয়া ও ভারী যন্ত্রপাতির ঘাটতির কারণে উদ্ধারকাজও ব্যাহত হয়েছে। উত্তর সুমাত্রার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শহর সিবোলগা এবং মধ্য তাপানুলি জেলায় ধীরগতিতে ত্রাণ পৌঁছচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ ভাঙা ব্যারিকেড, পানিতে ডুবে থাকা রাস্তা ও ভাঙা কাচ মাড়িয়ে খাবার, ওষুধ ও গ্যাস সংগ্রহের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ হাঁটুপানির সমান বন্যার পানির ভেতর দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কনভিনিয়েন্স স্টোরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে। পুলিশের মুখপাত্র ফেরি ওয়ালিনতুকান বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় দোকানে লুটপাটের খবর তারা পেয়েছেন এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে আঞ্চলিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছনোর আগেই লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বাসিন্দারা জানতেন না যে সহায়তা আসবে এবং তারা না খেয়ে থাকার আশঙ্কায় ছিলেন।” ক্যাবিনেট সচিব টেডি ইন্দ্রা উইজায়া রবিবার বলেন, দুর্যোগের পরদিনই জাকার্তা থেকে ১১টি হেলিকপ্টার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয় চলমান ত্রাণ ও সরবরাহ বিতরণ কার্যক্রমের জন্য- বিশেষ করে যেখানে স্থলপথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে তিনি যোগ করেন, ‘অনিশ্চিত আবহাওয়া প্রায়ই ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত করছে।’ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করছেন। প্রেসিডেন্টের প্রেস অফিসের এক বিবৃতি অনুসারে, প্রেসিডেন্ট আজ সোমবার সকালে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের মধ্য তাপানুলি জেলায় পৌঁছেছেন এবং বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের জন্য একটি পাবলিক রান্নাঘর ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।