আসুন, জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি

387

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের ভিত্তকে আরো সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আসুন, গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরো সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে আজ দেওয়া এক বাণীতে এ আহবান জানান। ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্র মুক্তি দিবস। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়। তিনি এ মহান দিবসে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী সংগ্রামী দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ নব্বই পরবর্তী দুই দশকে গণতন্ত্র, ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীকালে অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে দেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তিনি বলেন, তারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়ে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিকৃত করে। এই অবৈধ স্বৈরশাসকরা সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে।শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসন উৎখাত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোট ও মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করি। এ আন্দোলন সংগ্রামে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নেয়। নুর হোসেন, বাবুল, ফাত্তাহ, ডাঃ মিলনসহ অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষ আত্মাহুতি দেন। স্বৈরাচারী শাসক গণআন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় গণতন্ত্র। দেশবাসীর এই স্বতঃপ্রণোদিত ত্যাগ ও অধিকার রক্ষায় আপোসহীনতার জন্য অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের সকল আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী গণতন্ত্রপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। মানুষ তাদের সাংবিধানিক অধিকারের চর্চা করতে পারছে। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচার কাজ চলছে। তিনি বলেন, কোন অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্রই আমাদের সত্য ও ন্যায় এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাবই। আমরা সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক চর্চা ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব।