Site icon রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফএম

আজ চৈত্রসংক্রান্তি নেই কোনো উৎসব

চৈত্র সংক্রান্তি মানে বর্ষ শেষের উৎসব, লোকমেলার আয়োজন, গান-বাজনা, যাত্রাপালাসহ নানা আয়োজনে লোকজ সংস্কৃতির নানা সম্ভার। কিন্তু সব উৎসবের গলা চেপে ধরেছে ভয়ঙ্কর ভাইরাস করোনা।

বিদায় নিচ্ছে আরও একটি বাংলা বছর। আজ ১৪২৬ বঙ্গাব্দের শেষ দিন ৩০ চৈত্র। আজ চৈত্রসংক্রান্তি। আজ শেষ দিন ঋতুরাজ বসন্তেরও। কিন্তু আজ কোন উৎসব নেই। নেই প্রতি বছরের মতো শিল্পকলা একাডেমিরও কোন আয়োজন।

আবহমানকাল থেকেই বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়ে আসা চৈত্রসংক্রান্তির পার্বণ উদযাপন এবার আর হচ্ছেনা।

অথচ বাংলা সন ১৪২৬ তার শেষ গান গেয়ে বিদায় নেবে আজ। বসন্তকে বিদায় জানিয়ে আসবে নতুন বছর। নতুন দিনের বারতা নিয়ে আসবে বৈশাখ।

চৈত্রসংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে কাটান। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। ঘরোয়াভাবে কিছু হয়তো পালন হবে তার।

জানা যায়, চৈত্র মাসে স্বামী, সংসার, কৃষি, ব্যবসার মঙ্গল কামনায় লোকাচারে বিশ্বাসী নারীরা ব্রত পালন করতেন। এ সময় আমিষ নিষিদ্ধ থাকত। জিয়ল মাছ (পানিতে জিইয়ে রাখা যায় এমন মাছ) যেমন কৈ শিং মাগুরের ঝোল করে খেতেন তারা। থাকত নিরামিষ, শাকসবজি আর সাত রকমের তিতো খাবারের ব্যবস্থা। বাড়ির আশপাশ বিল খাল থেকে শাক তুলে রান্না করতেন গৃহিণীরা। এই চাষ না করা, কুড়িয়ে পাওয়া শাক খেতে বাগানে বেশি বেশি পাওয়া গেলে বিশ্বাস করা হতো- সারা বছরের কৃষি কর্ম ঠিক ছিল।

গ্রামের নারীরা এ সময় সাজগোছ করেন ঘরদোর। মাটির ঘর লেপন করে ঝকঝকে করেন। গোয়ালঘর পরিষ্কার করে রাখাল। সকালে গরুর গা ধুয়ে দেওয়া হয়। ঘরে ঘরে চলে বিশেষ রান্না। তৈরি করা হয় নকশি পিঠা, পায়েস, নারকেলের নাড়ু। দিনভর চলে আপ্যায়ন। গ্রামের গৃহস্থরা এ দিন নতুন জামা কাপড় পরে একে অন্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। জানি, এসবের অনেক কিছুই হবেনা এবার।

চৈত্রসংক্রান্তির আরেকটি বড় উৎসব ‘চড়ক’, এবার তাও হবেনা। গ্রামের জনপদে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা না হওয়ায় বিক্রি হবেনা মাটি, বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক ও ধাতুর তৈরি বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ও খেলনা।বিক্রি হবেনা বিভিন্ন প্রকার খাবার, মিষ্টি ও দই। হবেনা বায়স্কোপ, সার্কাস, পুতুল নাচ বা কোন হইচই। তবু আজ চৈত্র সংক্রান্তি।

Exit mobile version