Site icon রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফএম

আজ ইভিএম কার্যক্রমের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরবে ইসি

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ফেরাতে সরকারের আগ্রহের মধ্যে এ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে বৈঠকে বসছে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, আজ বৃহস্পতিবার কমিশনের সামনে ইভিএম কার্যক্রমের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। দেশ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এগোচ্ছে তখন নির্বাচন ব্যবস্থাপনাও ডিজিটাল করার দিকে যেতে হবে। আগামীতে এ পদ্ধতি চালু করার চিন্তাভাবনা করতে হবে। তাই নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে ইভিএম প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করা হবে। কমিশনই এরপর সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, দেশের ১০ কোটি ১৭ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য রয়েছে কমিশনের তথ্য ভা-ারে। এই ডেটাবেইজ কাজে লাগিয়ে কীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজড করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। বাংলাদেশের ভোটারদের সঙ্গে ইভিএমের প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এরপর স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে সফলভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও কারিগরি ত্রুটিকে কেন্দ্র করে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে এ মেশিন আটকে যায়। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে গত ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালুর পরিকল্পনা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণাকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ আখ্যায়িত করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সে সময় বলেন, জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরানোর জন্য ই-ভোটিং প্রধানমন্ত্রীর ‘আরেকটি ম্যাজিক’। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে আগামি বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। নতুন কমিশন ভোট আয়োজনের যে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে, তাতে ডিজিটাল ভোটিং পদ্ধতি হিসেবে ইভিএম নিয়ে প্রস্তুতির জন্যও সময় রাখা হয়েছে। ইসি সচিব বলেন, ইভিএম বা যে নামেই বলি, এ প্রযুক্তির সার্বিক বিষয় কমিশনের বৈঠকে তুলে ধরা হবে; সেই সঙ্গে তরুণদের উদ্ভাবিত নতুন একটি অ্যাপ উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের অনুমোদন পেলে আমরা পাইলটিং করব। ছোট পরিসরে ব্যবহারে সাফল্য পেলে পরে বড় পরিসরে যাওয়ার কথা ভাবা হবে বলে জানান তিনি। ইভিএমে কোনো ধরনের হ্যাকিং বা জাল-জালিয়াতির সুযোগ যেন না থাকে- তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই এটা নিয়ে এগোতে হবে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের উপযোগী করা, তফসিল ঘোষণার আগে ইভিএমের উপযোগিতা নিয়ে প্রচার চালানো, মক ভোটিং এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব রয়েছে ইসির খসড়া কর্মপরিকল্পনায়। ইভিএম নিয়ে ইসি নতুন করে উদ্যোগী হলেও জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যবহারের আগে রাজনৈতিক ‘ঐকমত্য’ তৈরির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান। তিনি বলেন, আগের কমিশনগুলো ইভিএম নিয়ে কাজ করেছে; সমস্যা রয়ে গেছে। ভারতেও বিতর্ক চলছে। এ অবস্থায় নতুন কমিশনকে সতর্কভাবে এগোতে হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কোনো কাজে নতুন ইসি যাতে কোনোভাবেই বিতর্কে না জড়ায় সে দিকেও নজর রাখতে বলেন তিনি। ছোটখাটো নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম চালু করা যেতে পারে আবার। সব ধরনের ত্রুটি সারিয়ে সবার মতামত নিয়ে ইভিএমকে বড় পরিসরে নেওয়া উচিত,” বলেন হাফিজউদ্দিন খান।

Exit mobile version