আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হলো আইনস্টাইনের চিঠি
পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আলবার্ট আইনস্টাইনের লেখা একটি ঐতিহাসিক চিঠি নিলামে বিক্রি হয়েছে। মাত্র দুই পাতার এই চিঠি বিক্রি হয়েছে ৩৯ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি দামে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার সমান। ঐতিহাসিক এই চিঠিটি নিলামে তুলে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি। বিজনেস ইনসাইডার অনুসারে, আইনস্টাইনের এই চিঠি মাইক্রোসফটের প্রয়াত সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেনের মালিকানায় ছিল। চিঠিটি এখন নিউইয়র্কে রুজভেল্ট লাইব্রেরির সংগ্রহশালার অংশ হয়ে গেল।
জানা গেছে, ১৯৩৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের কাছে চিঠিটি লিখেছিলেন তিনি। জার্মানিকে নিয়ে আশঙ্কা থেকে যুক্তরাষ্ট্র যাতে নিজেদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কর্মসূচি হাতে নেয়, তার অনুরোধ জানান ওই চিঠিতে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি আইনস্টাইনের চিঠিটি নিলামে তুলেছিল। চিঠিতে আইস্টাইন মূলত প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে জার্মানি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। তার এ চিঠিই পারমাণবিক বোমা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
চিঠিতে আইনস্টাইন পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন ইউরেনিয়াম শক্তির একটি নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন, এই শক্তিকে অত্যন্ত শক্তিশালী বোমা তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাডলফ হিটলারের উত্থানের কারণে সহকর্মী পদার্থবিদ লিও সিলার্ডসহ আইনস্টাইন ইউরোপ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আইনস্টাইনের চিঠিকে গুরুত্ব দিয়ে মার্কিন সরকার পারমাণবিক গবেষণাকে ত্বরান্বিত করে, যার ফলে ম্যানহাটন প্রকল্প এবং পরমাণু বোমার চূড়ান্ত বিকাশ ঘটে।
ক্রিস্টির জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ পিটার ক্লারনেট এ চিঠিকে ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী চিঠি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদিও এ চিঠির জন্য পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে গিয়েছিল; তবে পরে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন আইনস্টাইন। তিনি পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়নে তার সম্পৃক্ততাকে বড় ভুল বলে অভিহিত করেছেন। ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার পর আইনস্টাইন এই অস্ত্রের কারণে সৃষ্ট অপরিমেয় মানবিক যন্ত্রণার স্বীকৃতি দিয়ে বিলাপ করেছিলেন।