অস্ট্রেলিয়া পার্থেই অ্যাশেজ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে

435

চতুর্থ দিন শেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। একইসঙ্গে সিরিজ জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিয়েছে প্রথম দুই টেস্ট জয়ী অসিরা। পার্থে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৪০৩ রানের জবাবে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের ২৩৯ ও মিচেল মার্শের ১৮১ রানের সুবাদে ৯ উইকেটে ৬৬২ রান তুলে ইনিংস ঘোষনা করে অসিরা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২৫৯ রানের বড় লিড পায় স্বাগতিকরা। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে চতুর্থ দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৩২ রান করেছে ইংল্যান্ড। ইনিংস হার এড়াতে টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ১২৭ রান করতে হবে ইংলিশদের।
স্মিথের ২২৯ ও মার্শের ১৮১ রানের কল্যাণে ৪ উইকেটে ৫৪৯ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ও মার্শ দু’জনই অপরাজিত ছিলেন। চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় বলেই ইংল্যান্ড পেসার জেমস এন্ডারসনে বলে লেহ বিফোর ফাঁদে পড়েন মার্শ। তাই ১৮১ রানেই থেমে যেতে হয় তাকে। তার ২৩৬ বলের ইনিংসে ২৯টি চার ছিলো।
মার্শ কোন রান যোগ করতে না পারলেও চতুর্থ দিন ১০ রান তুলতে পেরেছেন স্মিথ। এন্ডারসনের বলে লেগ বিফোর হবার আগে ২৩৯ রান করেন তিনি। ৫৯ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি স্মিথের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে অ্যাশেজে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানও এটি। অ্যাশেজে অসিদের অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান রয়েছে বব সিম্পসন ও ডন ব্র্যাডম্যানের।
দলীয় ৫৬০ রানে স্মিথের বিদায়ের পর উইকেটরক্ষক টিম পাইন ও লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যান প্যাট কামিন্সের দৃঢ়তায় সাড়ে ৬শ’ রানের কোটা পেরিয়ে যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া। দু’জনের কেউই হাফ-সেঞ্চুরি না পেলেও, অষ্টম উইকেটে দলকে ৯৩ রান এনে দিয়েছেন পাইন ও কামিন্স। কামিন্স ৪১ রানে থামলেও ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন পাইন। কারণ ৯ উইকেটে ৬৬২ রানে ইনিংস ঘোষনা করে অস্ট্রেলিয়া। দেশের মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজে এটি অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ইংল্যান্ডের পক্ষে ১১৬ রানে ৪ উইকেট নেন এন্ডারসন।
প্রথম ইনিংসে ২৫৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ৩ রানে থাকা মার্ক স্টোনম্যানকে শিকার করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। স্টোনম্যানকে শিকার করেই ক্ষান্ত হননি হ্যাজেলউড। আরেক ওপেনার সাবেক অধিনায়ক অ্যালিষ্টার কুকের নামও নিজের শিকারের তালিকায় তুলেন হ্যাজেল। ২০ বলে ১৪ রান করে থামেন পুরো সিরিজে আগের পাঁচ ইনিংসে ৬৯ রান করা কুক।
২৯ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন জেমস ভিন্স ও অধিনায়ক জো রুট। জুটিতে ৩১ রান আসার পর এই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লিঁও’র ভেল্কিতে। নামের পাশে ১৪ রান রেখে লিঁও’র বলে প্রথম স্লিপে অসি দলপতি স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রুট।
এরপর প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড মালানকে নিয়ে ইংল্যান্ডের পালে রানের হাওয়া দেন ভিন্স। ফলে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। কিন্তু অর্ধশতকের পর নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেননি ভিন্স। অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ৫৫ রানে থেমে যান ভিন্স। তার ৯৫ বলের ইনিংসে ১২টি চার ছিলো।
দলীয় ১০০ রানে ভিন্সের বিদায়ের পর দিনের বাকী সময়টুকু বিপদ ছাড়াই শেষ করেন মালান ও উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টো। প্রথম ইনিংসে মালানের সাথে সেঞ্চুরি করা বেয়ারস্টো ১৪ রানে অপরাজিত আছেন। মালানের সংগ্রহ ২৮। অস্ট্রেলিয়ার হ্যাজেলউড ২টি উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড : ৪০৩ ও ১৩২/৪, ৩৮.২ ওভার (ভিন্স ৫৫, মালান ২৮*, হ্যাজেলউড ২/২৩)।
অস্ট্রেলিয়া : ৬৬২/৯ডি, ১৭৯.৩ ওভার (স্মিথ ২৩৯, মার্শ ১৮১, এন্ডারসন ৪/১১৬)।