অবৈধ বসতি ছেড়ে পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরায়েল গণহত্যামূলক বর্বর আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের ইসরায়েল ছাড়ার ঘটনা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা থেকে দলে দলে দেশ ছাড়ছে ইসরায়েলিরা। জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৪০ হাজার ইসরায়েলি অবৈধ বসতি স্থাপনকারী অধিকৃত অঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে, যা যুদ্ধের আগে দেশত্যাগের হারে তিনগুণ। দখলকৃত এলাকা ছেড়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের অনেকে তেলআবিবের কাছে বেনগুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরের শুরুতে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দখলকৃত অঞ্চল ছেড়ে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা পালাতে শুরু করে।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র মারিভ উল্লেখ করেছে, আগের বছরের তুলনায় এখন প্রতি মাসে অতিরিক্ত ২ হাজার বসতি স্থাপনকারী ফিলিস্তিনের অধিকৃত এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। প্রায় ১০ লাখ বসতি স্থাপনকারী সাম্প্রতিক বছরগুলিতে একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের আশঙ্কায় সতর্কতা হিসাবে পাসপোর্টে বিদেশি ভিসা লাগিয়ে অপেক্ষা করছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা বছরের প্রথম সাত মাসে আমানত হিসাবে বিদেশে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ইসরায়েল থেকে স্থানান্তর করেছে।
এটি একটি ‘ব্রেন ড্রেন’ ঘটনার দিকেও ইঙ্গিত করেছে, কারণ ইসরায়েল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে অনেকে ডাক্তার, বিজ্ঞানী, ফার্মাসিস্ট এবং উচ্চ প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞও রয়েছেন। কারণ, ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলে হামাস ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পাশাপাশি, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরাকের ইসলামিক প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর ওপর অবিরাম রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (সিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এবং ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে স্থায়ীভাবে ইসরায়েল ত্যাগ করা বসতি স্থাপনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। ইসরায়েলি গণমাধ্যম বর্তমান পরিস্থিতিটিকে ‘খুব কঠিন’ হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং প্রকৃতপক্ষে অধিকৃত ফিলিস্তিন ছেড়ে যাওয়া ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে উল্লেখ করেছে।