Site icon রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফএম

অবহেলা করবেন না পেটে ব্যাথা হলে!

পেট শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্যেই আমাদের অনেক অঙ্গ। যেমন- লিভার, প্লিহা, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, কিডনি ব্লাডার, মহিলাদের জরায়ু, ওভারি ইত্যাদি। এর সবগুলোতেই ব্যথা হতে পারে। বুঝতে পারছেন না এটি গ্যাস্ট্রিক নাকি অন্য কিছু। কী ওষুধ খাবেন, কার কাছে যাবেন, তা-ও বুঝতে পারছেন না। পেটে ব্যথার সঠিক স্থান, ধরন-ধারণ, আনুষঙ্গিক উপসর্গ ইত্যাদি মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
পেটের ব্যাথা কি কারণে তা নির্ভর করে রোগীর বয়স, ব্যথার সময়, অন্যান্য সমস্যা- যেমন জ¦র হচ্ছে কি না, বমি হচ্ছে কি না, পায়খানা কেমন হচ্ছে, এই সবই মিলে আমরা ধারণা করি পেটের ব্যথা সাধারণ না কি ঝুঁকিপূর্ণ।
অনেকে পেট ব্যথা হলেই ভাবে গ্যাসের কারণে ব্যথা। তবে এটি ভুল। পেটের ব্যথায় যদি রোগী গ্যাসের কারণে ব্যথা ভেবে ওষুধ খেয়ে ফেলে তখন এটি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। যেমন : একজন রোগী বলছে আমার পেটে গ্যাস আটকে গেছে। ডাক্তারের কাছে যখন গেলে তখন সে রীতিমতো তিন চার মাস দেরি করে ফেলছে। ডাক্তার তার পেটে হাত দিয়ে দেখল চাপ দিলে কোনো ব্যথা পাচ্ছে না। কিন্তু তার শরীরটা ঘেমে গেছে, ভিজে অস্থির হয়ে যাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে তার কোনো পদ্ধতিগত সমস্যা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে রোগীর জীবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের হার্টের নিচের সীমায় যদি সংক্রমণ হয়ে যায়, তখন পেটের ব্যথা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে যদি রোগী গ্যাস মনে করে বাড়িতে অপেক্ষা করে তবে ক্ষতি হতে পারে। কাজেই যদি কখনো কারো এ রকম একটি অবস্থা হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত পেটের ওপর দিকে মাঝখানে শুরু হয়। এটি খালি পেটে বাড়ে, কখনো চিনচিনে, কখনো জ¦ালাপোড়ার মতো মনে হয়। এর সঙ্গে বমিভাব, টক ঢেকুর, পেট ফাঁপা ইত্যাদি থাকতে পারে। অ্যান্টাসিড বা অন্য গ্যাস্ট্রিকের ওষুধে বেশ উপশম মেলে।
পেটের ওপরের দিকে ডান অথবা বাঁ কিডনিতে পাথর, প্রদাহ বা সংক্রমণ হলে সেই পাশে ও পেছনে ব্যথা হয়। এই ব্যথা ক্রমেই নিচে নেমে তলপেটেও ছড়ায়। কিডনির ব্যথা প্রচ- তীব্র হয়, একটু পরপর ছাড়ে, আবার আসে। সঙ্গে বমি, কাঁপুনি দিয়ে জ¦র থাকতে পারে।

পেটব্যথার কারণ:
* বদহজম
* কোষ্ঠকাঠিন্য
* পাকস্থলীতে ভাইরাস সংক্রমণ
* ঋতু¯্রাব
* খাদ্যে বিষক্রিয়া
* খাবারে অ্যালার্জি
* গ্যাস
* ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স
* পরিপাকতন্ত্রে আলসার
* কটিদেশে প্রদাহজনিত ব্যথা
* হার্নিয়া
* পিত্তথলিতে পাথর
* কিডনিতে পাথর
* ইউরিন ইনফেকশন
* ক্রনস ডিজিজ
* এন্ডোমেট্রিওসিস (মেয়েদের)
* গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা জিইআরডি
* অ্যাপেন্ডিসাইটিস
* খাদ্যনালিতে ক্যান্সার
* ব্যথানাশক ওষুধ সেবন
* লিভারের প্রদাহ
* খাদ্যনালিতে অবস্ট্রাকশন
* পেটে কৃমি (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ)। আবার কোনো কারণ ছাড়াও কিন্তু পেটব্যথা হতে পারে। একে বলে ফাংশনাল বাওল ডিসঅর্ডার। এটি যে কারো হতে পারে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও মধ্যবয়স্কদের পেটব্যথার সমস্যা বেশি হয়।
কখন পেটব্যথার চিকিৎসা প্রয়োজন আগেই বলা হয়েছে, পেটব্যথার বেশির ভাগ কারণ সাধারণ ও সাময়িক। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে পেটব্যথা মারাত্মক কিছু জটিলতা থেকেও হতে পারে। যদি পেটব্যথার সঙ্গে নিচের লক্ষণগুলো থাকে, তবে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

Exit mobile version