‘সেঞ্চুরিতে’ সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়ে মুমিনুলের পাশে মুশফিকুর

ঘড়ির কাঁটায় সকাল সাড়ে নয়টা থেকেই মিরপুর শের-ই-বাংলার সব ক্যামেরা তাক করা মুশফিকুর রহিমের ওপর। আগের দিন ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছিলেন। সাত সকালেই মুশফিকুর ছুঁয়ে ফেলবেন সেঞ্চুরি এমনটাই আশা করা হচ্ছিল। সেটাও বিশেষ এক উপলক্ষে। মুশফিকুর রহিম নিজের সেঞ্চুরি ম্যাচে করবেন সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসে এর আগে কেবল দশ ব্যাটসম্যানই নিজেদের সেঞ্চুরি ম্যাচে তিন অঙ্ক ছুঁতে পেরেছিলেন। রিকি পন্টিং একটু আলাদা। নিজের সেঞ্চুরির ম্যাচে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি তার। নিজেকে এবং পুরো বাংলাদেশকে অপেক্ষায় রাখলেন না মুশফিকুর। দ্বিতীয় দিনের নবম এবং নিজের খেলা অষ্টম বলে ১ রান নিয়ে ল্যান্ডমার্কে পৌঁছে যান। সেঞ্চুরির টেস্টে সেঞ্চুরি রান ক্রিকেট ইতিহাসের একাদশতম ক্রিকেটার মুশফিকুর। ইতিহাসের অক্ষয় কালিতে নিজের নাম লিখে ফেললেন এমআরফিফটিন।
১৯৬৮ সালে যেই যাত্রা শুরু করেছিলে কলিন কাউড্রে। এরপর জাভেদ মিয়াদাঁদ, গর্ডন গ্রিনিজ, ইনজামাম, আমলা, রুট সহ ওয়ার্নারের নাম আছে। এলিট এই ক্লাবের নবীনতম সদস্য মুশফিকুর। পুরো রাত যেই অপেক্ষায় ছিলেন মু্শফিকুর সেই ১ রান নিশ্চিত করেই ভো দৌড়। মাঝ ক্রিজে দুই হাত উপরে তুলে উদযাপন শুরু হয়ে যায় তার। রান পূর্ণ করার পর একটু রয়েশয়েই উদযাপন করেন। এরপর হেলমেট খুলে ব্যাট উঁচিয়ে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে এরপর সিজদাতে নিজেকে সপে দেন। সতীর্থ লিটনকে জড়িয়ে ধরার আগে গ্যালারিতে ব্যাট নাড়িয়ে মুশফিকুর সমর্থনদের জবাব দেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি পেলেন মুশফিকুর। দেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান করা মুশফিকুর এই সেঞ্চুরিতে মুমিনুল হককে ছুঁয়ে ফেললেন। মুমিনুল ১৩ সেঞ্চুরি নিয়ে আগে শীর্ষে ছিলেন। সেঞ্চুরি ম্যাচে সেঞ্চুরির ল্যান্ডমার্ক ছুঁয়ে মুশফিকুর এখন মুমিনুলের পাশে। তবে সেঞ্চুরির পর ইনিংসটি আর লম্বা করতে পারেননি। বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিজের ছোবল দেওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট সরাতে পারেননি। ২১৪ বলে ১০৬ রানে থেমে যায় তার ইনিংস।