ফুটবলকে বিদায় জানালেন স্ট্রাইকার ওয়াহেদ

393

কোনো চোট নেই। তারপরও হঠাৎ করেই বুট জোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন জাতীয় দলের স্ট্রাইকার ওয়াহেদ আহমেদ। অনেকটা আচমকাই ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত ২৩ বছর বয়সী সিলেটি যুবকের। ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ওয়াহেদ।

একটা বড়সড় স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বাবা অনেক স্বপ্ন দেখতেন যেন দেশের হয়ে ফুটবল খেলি। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে ফুটবল খেলা। লাল সবুজের পতাকার জন্য খেলেছি। অনেক ইচ্ছা ছিল দেশের ফুটবলকে ভালো কিছু দেওয়ার। ইচ্ছাটা পুরোপুরিভাবে শেষ হলো না। পরিবারকে সময় দিতে ফুটবল থেকে অবসর নিচ্ছি।’

আর কখনো জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবেন না বলে আক্ষেপ ঝরেছে তাঁর এই স্ট্যাটাসে, ‘দেশের হয়ে খেলতে পারব না, এটা সত্যি কষ্টকর। কিন্তু জীবন অনেক কঠিন। অনেক বেশি মিস করব দেশের ফুটবলকে।’ সিলেট থেকে জাতীয় দলে উঠে আসা পর্যন্ত যেসব খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তা তাকে বিভিন্ন সময় সাহায্য করেছেন ধন্যবাদ দিয়েছেন তাদেরও, ‘ফুটবলার ওয়াহেদ হওয়ার পেছনে আমাকে যারা সাহায্য করেছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ। বিশেষ করে আমার পরিবার, কোচ, সতীর্থ, সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেক বেশি ধন্যবাদ জানাচ্ছি সিলেটের সবাইকে। আমার এই সিদ্ধান্ত অনেকেই কষ্ট পাবেন। কিন্তু তবু আমাকে ক্ষমা করবেন।’

বছর পাঁচেক আগে মোহামেডানের বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পান ওয়াহেদ। ঢাকার ফুটবলে প্রথম নজর কাড়েন ২০১৩ গ্রামীণফোন সুপার কাপে মোহামেডানকে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতিয়ে। প্রিমিয়ার লিগে ওই মৌসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩টি গোল করেন। কিছুদিন মোহামেডানের অধিনায়কও ছিলেন। পরের মৌসুমে যোগ দেন আরেকটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনীতে। কিন্তু গত দুই মৌসুম কখনো চোট, কখনো বা আবাহনীর সাইড বেঞ্চ গরম করেই সময় কেটেছে। সব মিলিয়ে সময়টাও বেশি ভালো যাচ্ছিল না ওয়াহেদের।

ওয়াহেদ ২০১৩ সাফের জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর ২০১৪ কোরিয়ার এশিয়ান গেমসেও খেলেছেন।

২০১৪ সালে লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশি কন্যা শাহনাজ প্রিয়াকে বিয়ে করেন ওয়াহেদ। এরপর কখনো লন্ডন, কখনো বাংলাদেশ এভাবেই সময় কেটেছে। তবে গত মৌসুম শেষে বছরের শুরুতে স্থায়ীভাবেই পাড়ি জমান লন্ডনে। প্রায় তিন মাস বিদেশ থাকার পর আবারও মার্চে দেশে ফিরেছিলেন। অনেক ক্লাব থেকে নতুন মৌসুমে খেলার জন্য প্রস্তাবও পেয়েছিলেন ওই সময়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফুটবলকে ইতি টেনে চলে যান লন্ডনেই।

এমনিতেই দেশের ফুটবলে স্ট্রাইকার সংকট। মাত্র অল্প বয়সে এভাবে ওয়াহেদের ফুটবল ছেড়ে দেওয়াটা তাই মানতে পারছেন না ফুটবলপ্রেমী অনেকেই।