পোপের মৃত্যুর কারণ জানাল ভ্যাটিকান

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (৮৮) গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে নিজ বাসভবন মৃত্যুবরণ করেছেন।  তার মৃত্যুর কারণ সোমবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান সিটির হলি সি প্রেস অফিস। ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি পোপের মৃত্যুর সার্টিফিকেট জারি করেছেন।  ভ্যাটিকান নিউজ জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে স্ট্রোক, এরপর কোমা এবং অপরিবর্তনীয় হৃদযন্ত্রের রক্তনালী ধস। মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, পোপের মাল্টিমাইক্রোবিয়াল বিলাটেরাল নিউমোনিয়া, একাধিক ব্রঙ্কাইক্টেস, উচ্চ রক্তচাপ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কারণে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা ছিল। ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফিক থ্যানাটোগ্রাফির মাধ্যমে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডা. আর্কাঞ্জেলি লিখেছেন, “আমি ঘোষণা করছি, আমার জ্ঞান এবং বিচারে মৃত্যুর কারণগুলো উপরে বর্ণিত।” সম্প্রতি টানা পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পোপ। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক মাসের মাথায় মারা গেলেন এই ধর্মগুরু। সোমবার সকালে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।  ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। তিনি ছিলেন ৭৪১ সালের পর প্রথম নন-ইউরোপিয়ান পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরির মৃত্যুর পর রোমে আর কোনো নন-ইউরোপীয় পোপ আসেননি। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ ছিলেন ফ্রান্সিস। তিনি ক্যাথলিক গির্জায় সংস্কার কখনো বন্ধ করেননি। তারপরও তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ গোটা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও।