নাচোলে পেঁয়াজ বীজে স্বপ্ন বুনছেন ১০ চাষি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার সোনাইচন্ডী গ্রামের আতাউর রহমান। প্রতিবছর নিজ উদ্যোগে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেন তিনি। এবার এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করছেন তিনি। আর তাকে বৃহৎ পরিসরে পেঁয়াজ বীজ চাষে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি পুরো কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি।
শুধু আতাউর রহমানই নন, নাচোল উপজেলার আরো ৯ জনকে পেঁয়াজ বীজ চাষে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সংস্থাটি। বর্তমানে প্রয়াসের সহযোগিতায় পেঁয়াজ বীজ চাষে স্বপ্ন বুনছেন এই ১০ কৃষক। তারা প্রত্যেকেই করেছেন এক বিঘা করে পেঁয়াজ বীজ চাষ। এই বীজ আগামী শীতে চাষ করা হবে।
কৃষক মো. আতাউর রহমান বলেন, আমি কয়েকবছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পেঁয়াজ বীজ চাষ করে আসছি। পেঁয়াজ বীজ চাষ করার জন্য আমাদের নির্ভরযোগ্য বীজ দরকার। আমি প্রথমে এই বীজ চাষ করতে পারতাম না, হোঁচট খাওয়ার পর শিখেছি। আমি যেভাবে বীজ চাষ করি, সেখান থেকে আবহাওয়াজনিত কারণে কিছু সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া ফলন ভালোই হয়। তিনি জানান, পেঁয়াজ বীজ ১২০-১৩০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায় এবং এক বিঘা চাষ করতে ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো মানের বীজ পেলে এক বিঘা জমিতে প্রায় ১০০ কেজি বীজ পাওয়া যাবে। যদি ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায় তাহলে আপনি অনেক লাভবান হবেন। বর্তমানে পেঁয়াজ বীজ বিক্রি হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা কেজি দরে।
আতাউর রহমান বলেন, আপনি যদি প্রথমে ভালো মানের বীজ সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলে আপনি এটা চাষ করে অনেক লাভবান হতে পারবেন। তিনি বলেন, নিজের বীজ নিজে উৎপাদন করে ফসল উৎপাদন করব, তাহলে আমরা আরো লাভবান হতে পারব। আর আমাদের এলাকার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকায় বীজের চাহিদা মিটাতে পারব।
নাচোল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, এ বছর নাচোল উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ আবাদ হয়েছে। আমরা আশা করছি, বিঘাপ্রতি ৭০-৮০ কেজি করে পেঁয়াজ বীজ পাওয়া যাবে। এবছর আবহাওয়া ভালো ছিল এবং পলিনেশন ও ভালো ছিল। আগামীতে যেন আরো বেশি পরিসরে পেঁয়াজ বীজ চাষ করা হয়, তার জন্য কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করছি। উপজেলা কৃষি অফিসের সাথে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটিও কৃষকদেরকে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে সহায়তা করছে।
কৃষিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উন্নত পদ্ধতিতে যে কোনো ফসল উৎপাদন করলে তা থেকে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কৃষিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ আগামীতে প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে অগ্রসর হবে বলে আশা প্রয়াস পরিবারের কর্মকর্তাদের।