নতুন গবেষণায় টাইটানে প্রাণের সম্ভাবনা

সৌরজগতের বৃহৎ উপগ্রহগুলোর মধ্যে শনি গ্রহের চাঁদ টাইটানে মিথেন গ্যাস আটকে থাকার সম্ভাবনা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দল জানিয়েছে, টাইটানের পৃষ্ঠে ৯.৭ কিলোমিটার পুরু একটি স্তরের নিচে মিথেন আটকা থাকতে পারে। এই তথ্য তারা টাইটানের উপরিভাগে থাকা ক্ষুদ্র গভীরতা সম্পন্ন গহ্বর পর্যবেক্ষণ করে পেয়েছেন। এই গহ্বরগুলো অন্যান্য উপগ্রহের তুলনায় অনেক কম গভীর হওয়ায় বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, টাইটানের পৃষ্ঠতলে বিশেষ কিছু প্রক্রিয়ার কারণে এসব গহ্বর দ্রুত অগভীর হয়ে যাচ্ছে। গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী লরেন শুরমায়ার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আরও বিশদ ধারণা পেতে তারা কম্পিউটার মডেলিং পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা পৃষ্ঠের মিথেন ক্ল্যাথ্রেট স্তরটি ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার পুরু বলে ধারণা করেছেন। তাদের তৈরি মডেলে এই স্তরের পুরুত্বের সঙ্গে গহ্বরের গভীরতা বেশ মিলে যায়। মিথেন ক্ল্যাথ্রেট বা ‘মিথেন হাইড্রেট’ হলো একটি কঠিন যৌগ যা বরফের মতো দেখতে হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস আটকে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, টাইটানে এই মিথেন ক্ল্যাথ্রেট নিয়ে গবেষণা করলে এর কার্বন চক্র এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন সম্পর্কে আরও জানা যেতে পারে। গবেষণায় বলা হয়েছে, মিথেনের এই পুরু স্তর টাইটানের অভ্যন্তরকে উষ্ণ রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এ অবস্থায় সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে, কারণ প্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় বায়োমার্কারগুলো টাইটানের পৃষ্ঠতলে পৌঁছে যেতে পারে। লরেন শুরমায়ার বলেন, ‘যদি টাইটানের বরফ স্তরের নিচে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তবে বায়োমার্কারগুলো উপরের স্তর পর্যন্ত উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতের মিশনগুলোর মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। টাইটান শুধু পৃথিবীই নয়, সৌরজগতের আরেকটি স্থান যেখানে বায়ুমণ্ডল এবং তরল পদার্থের উপস্থিতি দেখা যায়। টাইটানের পৃষ্ঠে মিথেন ও ইথেনের নদী, হ্রদ এবং সাগর রয়েছে। এছাড়া এর নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ ঘন বায়ুমণ্ডলের কারণে পৃষ্ঠে চলাফেরা করতে বিশেষ স্যুটের প্রয়োজন হয় না, তবে শ্বাস নিতে অক্সিজেন মাস্ক অবশ্যই দরকার হবে। সূত্র : এনডিটিভি