ট্রফি নয়, ভালোবাসা নিয়েই রিয়াল অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ

নিরবেই ঘটল এক আবেগঘন বিদায়ের। রিয়াল মাদ্রিদে ১৩ বছর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল ক্রোয়েশিয়ান তারকা লুকা মদ্রিচের। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) কাছে ৪-০ গোলে হারের ম্যাচটিই হয়ে রইল সাদা জার্সিতে এই কিংবদন্তির শেষ ম্যাচ। জয় নয়, কিংবা ট্রফিও নয়; গতকাল রাতে নিউ জার্সির মাঠে ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল একটি বিদায়ের মুহূর্ত। রিয়াল মাদ্রিদ যখন পিএসজির দাপটে মুখ থুবড়ে পড়ছে, তখন পুরো স্টেডিয়ামের চোখ ছিল একদিকেই। সেটি হচ্ছে লুকা মদ্রিচ!

প্রথমার্ধেই ফাবিয়ান রুইসের জোড়া গোল এবং দেম্বেলের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ২৪ মিনিটের মধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি। পরে গন্সালো রামোসের গোলের মাধ্যমে স্কোরলাইন ৪-০ হয়। ম্যাচটির ৬৪তম মিনিটে মাঠে নামেন ৩৯ বছর বয়সী মদ্রিচ। ম্যাচ তখন অনেকটাই হাতছাড়া, কিন্তু মাঠে নামার পরেও তার উপস্থিতিতে ভুলের কোনো সুযোগ রাখেননি। বল পায়ে তার স্বাচ্ছন্দ্য, নিখুঁত পাস, সেট-পিসে নেতৃত্ব; সবমিলিয়ে খুব অল্প সময়ে দেখা মিলেছে চেনা মদ্রিচের। মে মাসে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মদ্রিচের আনুষ্ঠানিক বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে গেলেও, মাঠে এটিই ছিল তার আসল ‘বিদায়’। ম্যাচ শেষে সতীর্থ, এমনকি পিএসজির খেলোয়াড়রাও তাকে জড়িয়ে ধরেন। কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে দেখা যায় এক আবেগঘন মুহূর্ত। এই কোচই একটা সময় সতীর্থ হয়ে খেলেছিলেন মদ্রিচের সঙ্গে।

চলতি ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মদ্রিচ। সময়ের বিচারে খেলার সুযোগ কম হলেও, প্রতিবারই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ দিয়ে দলকে সহায়তা করেছেন।

রিয়ালের জার্সিতে প্রায় ৬০০ ম্যাচ খেলা মদ্রিচের ঝুলিতে রয়েছে ২৮টি ট্রফি। তবে শেষ মৌসুমটা কাটেনি ভালো। ট্রফিলেস মৌসুম কাটাতে হয়েছে ইউরোপের সফলতম দলটিকে। তবে মদ্রিচের জন্য এই হতাশা থেকে বড় কিছু ছিল ভক্তদের ভালোবাসা, সতীর্থদের সম্মান এবং এমন এক ঐতিহ্য, যা কেবল গুটিকয়েক কিংবদন্তিরই প্রাপ্য।