ঝড়ের তাণ্ডবে ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ডে নিহত অন্তত ৭
প্রচণ্ড ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা এবং ভূমিধসে ইউরোপের দুই দেশ ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডে অন্তত সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার ওই দুই দেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে। ফ্রান্সের স্থানীয় এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ফ্রান্সের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আউবে অঞ্চলে প্রচণ্ড বাতাসের কারণে একটি গাছ উপড়ে গাড়ির ওপর পড়েছে। এতে ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সী তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়া গাছের নিচে চাপা পড়া গাড়ির আরেক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রতিবেশী সুইজারল্যান্ডে ঝড়ের তাণ্ডবে অন্তত চারজন নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে বলে দেশটির টিকিনোর ক্যান্টন পুলিশ জানিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের ভ্যালাইসের দক্ষিণ-পশ্চিমের ক্যান্টনের সাস-গ্রুন এলাকার একটি হোটেলে একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বন্যার পানি আকস্মিক বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ বলেছে, ভ্যালাইসে অপর এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের বেসামরিক নিরাপত্তা সেবা সংস্থা বলেছে, ভ্যালাইসের রোন ও অন্যান্য নদ-নদীর দুই তীর উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ওই এলাকা থেকে কয়েকশ’ বাসন্দিাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেশটির জরুরি সেবা সংস্থাগুলো পেকিয়া এলাকায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট দেখতে আসা ৩০০ দর্শনার্থীকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া মোগনো গ্রামের একটি হলিডে শিবির থেকে প্রায় ৭০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ বলছে, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশটির কয়েকটি দুর্গম উপত্যকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সতর্ক ব্যবস্থা বলেছে, ক্যান্টনের কিছু এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ফুরিয়ে গেছে।
এর আগে, গত সপ্তাহেও দক্ষিণ-পূর্ব সুইজারল্যান্ডে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। সেই সময় ওই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও একজনের প্রাণহানি ঘটে। এদিকে, উত্তর ইতালির আওস্তা উপত্যকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসা বন্যার পানি ও পানিতে টুইটম্বুর নদীর ছবি শেয়ার করেছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে বন্যা ও ঝড়ের মতো চরম বৈরী আবহাওয়ার বিভিন্ন ঘটনার তীব্রতা ও বারবার আঘাত হানার ঘটনা বাড়ছে এবং এর প্রভাবও দীর্ঘ হচ্ছে।