চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে ঐতিহ্যবাহী পুকুর রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর ৬ ও ১৪ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আনুমানিক ১৮ বিঘা আয়তনের ডোমন সিং এর পুকুর নামে পরিচিত একটি পুকুর ও পুকুরের তীর রক্ষার দাবিতে সড়ক বন্ধ করে লাঠি, ঝাঁটা হাতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি পুকুরটির দখলে ভূমিদস্যূরা অপতৎপরতা শুরু করেছে। অথচ এলাকাবাসী হিন্দুদের ছেড়ে যাওয়া সম্পত্তি হিসেবে গত ৭০/৮০ বছর যাবৎ পুকুরটি ব্যবহার করছেন। আজ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর কেন্দ্রের শান্তিমোড় এলাকায় বটতলাহাটগামী সড়কের পাশে পুকুরের কিনারায় দাঁড়িয়ে শান্তিমোড়, রামকৃষ্টপুর, আজাইপুর, আরামবাগ, মৃধাপাড়া ও শংকরবাটি মহল্লার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েকশত মানুষ কর্মসূচীতে অংশ নেন। এসময় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ও লাল মোহম্মদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল বারেক, সিরাজুল ইসলাম, দুলাল আলী, শহিদুল ইসলাম জার্জিস, চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটি সদস্য সচিব মনিরুজ্জমান মনির, এলাকাবাসী এড.আব্দুল খালেদ, ওয়াহেদজ্জমান ওহিদ, সুমী খাতুন, শামীম আহমেদ, মিজানুর রহমানসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি ইট,পাথরের শহরের একটি উন্মূক্ত জলাশয়। ৬টি মহল্লার বাসিন্দারা দৈনন্দিন পানি ব্যবহারের প্রয়োজনে এটি ব্যবহার করেন। এ ছাড়া বনোদন ও প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষাতেও রয়েছে পুকুরটির ভূমিকা। বক্তরা আরও বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরপরই এটি দখলের তৎপরতা বেড়ে গেছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহল এই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সফল হয় নি। এটি ঘিরে সরকার ও পৌরসভা বিভিন্ন সময় উন্নয়নের মাধ্যমে এটি রক্ষা ও বিনোদন স্পট করার পরিকল্পনা করেছেন। এলাকাবাসীর আরও বলেন,এখন এত বছর পর কেউ যদি সম্পত্তিটির অনুকুলে নিজেদের মালিকানার পক্ষে কোন আইনীভিত্তি পেয়েও থাকেন, তবে পরিবেশ,জীববৈচিত্র্য রক্ষা,শহর ও এলাকাবাসীর স্বার্থে এটি রক্ষায় সরকার যেন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুরুল ইসলাম বলেন, ওই সম্পত্তিটির কিছু অংশ অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভূক্ত। সম্পতি সম্পত্তিটির অর্পিত একটি অংশের মালিকানা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পল ট্রাইবুনাল কর্তৃক সদর উপজেলার এক ব্যাক্তির নামে অবমুক্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী পত্র পেয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক আমাদের জানালে আমরা সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শণ করেছি। ইউএনও আরও বলেন,আদালতের আদেশের বাইরে প্রশাসনের কিছু করার নেই। তবে যেহেতু এলাকাবাসী সম্পত্তিটি রক্ষার জন্য আন্দোলন করছেন,সেহেতু তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখে আদালতকে বিষয়টি অবহিত করা যেতে পারে।এছাড়া জলাশয় রক্ষা আইনে কোন অবস্থাতেই জলাশয়টি ভরাট করার কোন সূযোগ নাই।