চাঁপাইনবাবগঞ্জে হু হু করে বাড়ছে পদ্মা, মহানন্দা সহ নদীগুলোর পানি, নিমজ্জিত প্রায় ১০ হাজার বিঘা কৃষি ফসল
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১ সপ্তাহ থেকে অনেকটা হঠাৎ করেই হু হু করে বাড়ছে পদ্মা,মহানন্দা, পূণর্ভবাসহ সকল নদনদীর পানি। স্থানীয়রা ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে,এতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা নদীতীরবতী নীচু জমির মাসকললাই, রোপা আউশ, সবজি,গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, চীনা ইত্যাদি কৃষি ফসল। তবে বেশি তলিয়েছে মাসকলাই ক্ষেত। এদিকে বন্যার শংকা নেই জানিয়ে আর ২/৩দিন বৃদ্ধির পরই কমতে শুরু করবে পানি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে নদীতীরবর্তী জনপ্রতিনিধিসহ কোন সূত্র এখনও কোন ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হবার খবর জানায় নি। তবে চরাঞ্চলে বসতবাড়ির নিকটেই চলে এসেছে পানি বলে জানা গেছে। এদিকে পদ্মার তীর ভাঙ্গার খবর পাওয়া গেছে। পাউবো সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার বিপদসীমা ২২.০৫ মিটার। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। রবিবার(২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ২১.০৭ মিটারে। রবিবার সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ২০.৯৫ মিটারে। যা গত শনিবার(২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ২০.৭৮ ও সকালে ২০.৫৯ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ গত ৩৬ ঘন্টায় জেলার প্রধান নদীর পানি বেড়েছে ৪৮ সেমি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অপর প্রধান নদী মহানন্দার বিপদসীমা ২০.৫৫ মিটার। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে এ্ই নদীর পানি বাড়ছে। রবিবার সন্ধ্যায় যা প্রবাহিত হচ্ছিল ১৮.৮০ মিটারে। যা সকালে প্রবাহিত হচ্ছিল ১৮.৬৭ মিটারে। গত শনিবার সন্ধ্যায় নদী প্রবাহিত হচ্ছিল ১৮.৫৪ ও সকালে ১৮.৩৮ মিটারে। অর্থাৎ গত ৩৬ ঘন্টায় জেলার এই নদীর পানি বেড়েছে ৬২ সেমি। জেলার অপর নদী গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্ণভবা নদীর বিপদসীমা ২১.৫৫ মিটার। রবিবার সন্ধ্যায় নদীটি ১৮.৭২,সকালে ১৮.৫৯,গত শনিবার সন্ধ্যায় ১৮.৪৪ ও সকালে ১৮.২৯ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ গত ৩৬ ঘন্টায় এই নদীর পানি বেড়েছে ৪৩ সেমি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, উজানে ভারতে বৃষ্টিপাতই পানি বৃদ্ধির মূল কারণ। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কে›ন্দ্র বন্যার কোন পূর্বাভাস জানায়নি বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, হাইড্রোলজি বিভাগ বলছে ২ দিন পানি বাড়বে এরপর কমতে শুরু করবে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। পানি ফারাক্কা পয়েন্ট দিয়েই বাংলাদেশে ঢুকছে বলেও তিনি জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, রবিবার পর্যন্ত জেলায় পানি বৃদ্ধিও কারণে ১ হাজার ৩৫৪ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩১২ হেক্টরই মাসকলাই। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা। পরিমান হাজার হেক্টরের বেশি। এরপর সদর ও গোমস্তাপুর উপজেলা রয়েছে আক্রান্তের তালিকায়। সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ সীমান্তবর্তী শিবগঞ্জের পদ্মাবেষ্টিত পাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ও ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন,কালাই সম্পূর্ণ শেষ। পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। যার হারও তীব্র। তারা বলেন,পাশের সদরের নারায়নপুর ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙ্গণ তীব্র হয়েছে। ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে পাঁকার লক্ষীপুর, বোগলাউড়ি এলাকাতেও।