খালি পেটে তুলসি ভেজানো পানি খাবেন যে কারণে
তুলসি পাতা তার ঔষধি গুণাবলীর জন্য পরিচিত। বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য এই পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তুলসি Lamiaceae পরিবারের অন্তর্গত এবং এটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির একটি জনপ্রিয় উপাদান। শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি, ভাইরাল সংক্রমণ, এবং আরো অসুখ সারাতে কাজ করে এই পাতা। কাশি এবং সর্দি থেকে তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য তুলসি পাতা চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে, অথবা পাতা বা বীজ ফুটন্ত পানিতে যোগ করে চা হিসেবেও পান করা যেতে পারে। তুলসি গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি প্রতিদিন খালি পেটে খেতে পারেন।
তুলসি ভেজানো পানির উপকারিতা
বর্ষাকালে তুলসি বিশেষভাবে উপকারী। কারণ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং সিজনাল ফ্লুর মতো অসুখ নিরাময়ের প্রতিকার হিসাবে এর পাতা বিশেষভাবে কাজ করে। আয়ুর্বেদিক কাশির চিকিৎসা হিসেবে তুলসি পাতার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধির ক্ষেত্রে শ্লেষ্মা মুক্ত করতে সহায়তা করতে পারে। তুলসি গলা ব্যথা থেকেও মুক্তি দিতে পারে।
কিডনির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
তুলসির অনেক নিরাময় বৈশিষ্ট্য কিডনিতে পাথর রোগীদের জন্যও উপকারী হতে পারে। রেনাল স্টোনে আক্রাক্রো মধুর সঙ্গে এই পাতার রস খেলে উপকার পাবেন। এটি মূত্রনালীর মাধ্যমে পাথর অপসারণ করতে পারে। সেজন্য ছয় মাস পর্যন্ত এই পানি খেতে হতে পারে।
রক্তে শর্করার বৃদ্ধি রোধ করে
তুলসি ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজের মাত্রা, রক্তের কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করতে পারে। গ্লোবাল সায়েন্স রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, খালি পেটে দুই থেকে তিনটি তুলসি পাতা বা এক টেবিল চামচ তুলসির রস খেলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায়
তুলসির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায়ও উপকারী। তুলসীর রস প্রয়োগ করলে তা ছত্রাকের সংক্রমণ এবং অন্যান্য ত্বকের রোগের চিকিৎসায় কাজ করে। এটি লিউকোডার্মা নিরাময়েও ব্যবহার করা যেতে পারে।
মানসিক চাপ কমায়
তুলসি একটি অ্যাডাপ্টোজেনিক হিসাবে পরিচিত যা মেজাজের পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে। এটি প্রশান্তি এবং মানসিক স্বচ্ছতা বাড়াতেও সহায়তা করে। এটি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শরীরের ক্ষমতা বাড়ায়।
হার্টের স্বাস্থ্য
তুলসি ভিটামিন সি এবং ইউজেনলের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার, যা ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে হার্টকে রক্ষা করে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী আদা, রসুন, লাল আঙ্গুর এবং বরইয়ের সমতুল্য।
রক্তচাপ কমায়
তুলসি রক্তচাপ কমানো সহ বিভিন্ন অসুখে একটি আয়ুর্বেদিক প্রতিকার। এটি পটাসিয়াম, ভিটামিন এ এবং সি সমৃদ্ধ। কার্যকর ফলাফলের জন্য চার থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন খালি পেটে তুলসি ভেজানো পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।