01713248557

কেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৩৯ জন নিহত

কেনিয়ায় কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে সরকারবিরোধী সাম্প্রতিক বিক্ষোভে অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছে। কেনিয়া ন্যাশনাল কমিশন অন হিউম্যান রাইটস (কেএনসিএইচআর) নিহতদের নতুন এ সংখ্যা প্রকাশ করেছে।  মঙ্গলবার (২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা কেএনসিএইচআর দেশটিতে সরকারবিরোধী সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ৩৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির প্রকাশ করা নিহতের এই সংখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা সংখ্যার দ্বিগুণ। সরকারের অর্থায়নে চলা এই সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, আমাদের রেকর্ড থেকে পাওয়া তথ্য থেকে ইঙ্গিত মিলছে যে, বিক্ষোভকালে ৩৯ জন নিহত এবং ৩৬১ জন আহত হয়েছে।  বিবৃতিতে বিক্ষোভের সময়কাল ১৮ জুন থেকে ১ জুলাই উল্লেখ করা হয়েছে। সংস্থাটি আরো বলেছে, এ পর্যন্ত মোট ৩২টি মামলা হয়েছে এবং ৬২৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার প্রায় সব ধরনের পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধিসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয় কেনিয়ার পার্লামেন্টে। প্রস্তাবটি পাসের সঙ্গে সঙ্গেই পার্লামেন্ট চত্বরসহ পুরো নাইরোবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট চত্বরের একটি পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন, বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি শুরু করে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগ, যিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। সেই নির্বাচনের পর থেকেই কেনিয়ায় দিন দিন রাজনৈতিক বিভক্তি তীব্র হয়ে উঠেছে। রোববার (৩০ জুন) কেনিয়ার সরকারি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন উইলিয়াম রুটো। সেই ভাষণে তিনি বলেছেন, আন্দোলনে এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তবে তাদের মৃত্যুর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়ী নয় বলে দাবি করে মৃত্যুর তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আজ সোমবার (৩ জুলাই) কেএনসিএইচআর তাদের বিবৃতিতে বিক্ষোভকারী, চিকিৎসাকর্মী, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলপ্রয়োগ এবং চার্চ, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের মতো নিরাপদ স্থানগুলোতে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।  জাতীয় মানবাধিকার সংস্থাটির অভিমত, ‘বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে শক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল তা অত্যধিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।’  সংস্থাটি পার্লামেন্ট ভবন ও অন্যান্য সরকারি ভবনে কিছু বিক্ষোভকারীর ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের মতো সহিংতামূলক কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) কর বৃদ্ধি সম্বলিত বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট রুটো। তবে তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা নতুন দফায় কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। কেনিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ভরে উঠেছে ‘সব জায়গা দখল করো’, ‘রুটোর বিদায় চাই’, ‘বাজেট দুর্নীতিবাজদের বাতিল করো’ প্রভৃতি হ্যাশট্যাগে।