01713248557

ইনিংস ব্যবধানে হেরে ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান

মুলতানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৪৭ রানে হেরে নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে পাকিস্তান। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দল প্রথম ইনিংসে ৫০০’র বেশি রান তোলার পর ইনিংস ব্যবধানে হারের নজির গড়ল।

দুই টেস্টে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের ৫৫৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৮২৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। সফরকারীদের ২৬৭ রানের লিড পায়। টেস্টে এটি চতুর্থ সর্বাধিক দলীয় রানের রেকর্ড। শুক্রবার পঞ্চম দিন ২২০ রানে স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায়। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ফরম্যাটটিতে এতি তাদের টানা ষষ্ঠ হার। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ৯ টেস্টে দলটি সপ্তম হারের স্বাদ পেলো। ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশের মাটিতে দলটি টানা ১১ ম্যাচ (৭ হার, ৪ ড্র) জয়ের মুখ দেখেনি। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ঘরের মাঠে খেলা ১১ টেস্টের মধ্যে ১টিতে হেরেছিল ও ১০টিতে ড্র করেছিল।

পাকিস্তানের লজ্জার এখানেই শেষ নয়। ইংল্যান্ড দলীয় আট শতাধিক রান স্কোরবোর্ডে তুলেছে ১৫০ ওভারে (৯০০ বল)। এত লম্বা সময় বোলিং করেও পাকিস্তানি বোলাররা মাত্র একটি মেডেন ওভার নিতে পেরেছে। এর আগে ১৯৩৯ সালে ডারবানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৮.৫ ওভারে (৮ বলে ওভার ছিল) বোলিং করে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা কোনো মেডেন ওভার আদায়ে সক্ষম হয়নি। রেকর্ডতি এখনো অক্ষত রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ওভার ও ডেলিভারিতে সবচেয়ে কম মেডেন নেয়ার রেকর্ড পাকিস্তানের নামের পাশে লেখা হয়ে গেল। দুই দল প্রথম ইনিংসে ৫৫০ রানের বেশি তোলার পরও সুদীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ম্যাচের ফল এসেছে। ২০২২ সালে এই দুই দলের রাওয়ালপিন্ডি টেস্টেও একই ঘটনা ঘটেছিল।

মুলতান টেস্টের তিন ইনিংস মিলিয়ে রান রান রেট ৪.৫১। অন্তত ২০০০ বল খেলা হয়েছে, এমন টেস্টে এটি দ্বিতীয় সর্বাধিক। ২০২২ সালে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচে রেকর্ড ৪.৫৪ রানরেট উঠেছিল। এক ইনিংসে ৫০০ রান ছুঁয়েও শেষ পর্যন্ত হেরে যাওয়ার ঘটনা টেস্টে এই নিয়ে ১৯ বার ঘটল। সর্বোচ্চ পাঁচবার এমন হারের শিকার পাকিস্তান।

এক ইনিংসে সর্বাধিক তিন ব্যাটার সেঞ্চুরি আদায় করলেও দল হিসেবে এমন ম্যাচে দ্বিতীয়বার পরাজয়ের দৃষ্টান্ত দেখাল পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে ২০২২ সালে ইংলিশদের সঙ্গে তাদের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল। কলম্বো টেস্টে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলংকার তিন ব্যাটার শতক হাঁকিয়েছিলেন। তবুও স্বাগতিকরা হেরে বসেছিল। এদিকে, দীর্ঘ ৪৮ বছর পর টেস্টে এশিয়া মহাদেশে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের মুখ দেখল ইংল্যান্ড। ১৯৭৬ সালে দিল্লি টেস্টে ইংলিশরা ভারতের বিপক্ষে ইনিংস ও ২৫ রানে জিতেছিল।

শুক্রবার ৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে স্বাগতিকরা পঞ্চম ও শেষদিনের খেলা শুরু করে। চতুর্থ দিন ম্যাচের মাঝপথে অসুস্থ হয়ে পড়েন স্পিনার আবরার আহমেদ। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। অসুস্থতার কারণে ব্যাট করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৬৩ রানে থাকতে আঘা সালমানকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন জ্যাক লিচ। এতে সপ্তম উইকেটে আমের জামালের সঙ্গে তার ১০৯ রানের জুটি ভাঙে। এরপর লিচ শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহর উইকেট তুলে নেন। জামাল অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে।