অবশ্যই এই চিঠি চাটুকারিতার মধ্যেই পড়ে, এর জন্য অপমান আমার প্রাপ্য: জয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একেবারেই নির্লিপ্ত থেকে সমালোচনা ও ধিক্কারের মুখে পড়েন অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় । এজন্য এক ভিডিও বার্তায় জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমাও চান তিনি। সেই সমালোচনার রেশ কাটার আগেই এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘আদর্শ মা’ সম্বোধনে তার লেখা এক আবেদনপত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে ফের সমালোচনার মুখে পড়লেন এ অভিনেতা-উপস্থাপক। চিঠিটি পোস্ট করে জয়কে ‘চাটুকার’ তকমা দিয়েছেন নেটিজেনদের অনেকে। এ বিষয়ে এ অভিনেতাও স্বীকার করে বললেন, ‘অবশ্যই এই চিঠি চাটুকারিতার মধ্যেই পড়ে। এর জন্য অপমান আমার প্রাপ্য। ’শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা লেখেন জয়। উল্লেখ্য, চিঠিটি ২০১৪ সালের। পূর্বাচলে এক খণ্ড জমি পাওয়ার আশায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ নেত্রী ও আদর্শ মা বলে সম্বোধন করে সেই চিঠি লিখেছিলেন জয়। এ বিষয়ে জানতে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে না পাওয়া গেলেও ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বক্তব্য দিলেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে শাহরিয়ার নাজিম জয় লিখেছেন, ‘আলো আসবেই গ্রুপে পান নাই। ইউটিউবারদের ষড়যন্ত্রে পান নাই। তাই বলে আমাকে ছেড়ে দেবেন কেন? ২০১৪ সালের একটি চিঠি এই নিয়ে ১৪ বার ভাইরাল করলেন। সাবেক সরকারের কাছ থেকে অনেকেই জমি নিয়েছেন। সেই প্লটগুলো ১৩-এ ধারা। এই সরকার ইতোমধ্যে সব প্লট বাতিল ঘোষণা করেছে। তার পরও ফেসবুকে এই চিঠি নিজস্ব লোকেরা পোস্ট করছেন, আমার নম্বর ভাইরাল করছেন এবং আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা করছেন। ’ তিনি চিঠি প্রসঙ্গে লেখেন, ‘অবশ্যই এই চিঠি চাটুকারিতার মধ্যেই পড়ে। এর জন্য অপমান আমার প্রাপ্য। কিন্তু দেখেন শাস্তিটা বেশি দিয়ে ফেলেন না। আল্লাহ তবে আপনাদেরও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ যে আছেন এবং যথাসময়ে পাপের শাস্তি হয়, তা আমরা তো সবাই বুঝে গেছি তাই না? ঘৃণা না ছড়িয়ে শান্ত হন। সবাই মিলে ভালো থাকি। চলুন, সবাই যার যার ভুল সংশোধন করি। ’
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ চেয়ে কী লেখা রয়েছে জয়ের সেই চিঠিতে?
শুরুতেই শেখ হাসিনাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ নেত্রী ও আদর্শ মা’ সম্বোধন করেছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়। এরপর তিনি লিখছেন, ‘আপনার সুযোগ্য পুত্রের নামের আরেক পুত্র শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সালাম রইল আপনার প্রতি। আমি জয়, বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় নায়ক (টিভি ও চলচ্চিত্র)। আপনার দোয়ায় গত ১৭ বছর ধরে আমি বাংলাদেশের জনগণের বিনোদনের অন্যতম উৎস হয়ে আছি টিভি পর্দায় এবং সুস্থ চলচ্চিত্রে। ’ শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রশংসা জানিয়ে জয় লেখেন, ‘আপনি অত্যন্ত দরদি এবং বাংলার মানুষের বিপদের বন্ধু। শুধু তাই নয়, গত নির্বাচনকালীন সময়ে আপনি যে বলিষ্ঠ সাহসী এবং জ্ঞানদীপ্ত আদর্শের উপর বলীয়ান ছিলেন, তা আমাদের মতো মানুষকে আজীবন আপনার নেতৃত্বকে স্যালুট জানানোর অঙ্গীকার করিয়েছে। ’ আবেদনের তৃতীয় প্যারায় তিনি নিজের চাওয়া স্পষ্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘মা, আপনার নিকট একজন শিল্পীর আবেদন, আমার সমসাময়িক সকল শিল্পীই পূর্বাচলে ১০ কাঠা, ৫ কাঠার প্লট পেয়েছে। আমি দেশের বাইরে শুটিংয়ে থাকার জন্য অ্যাপ্লাই করতেই পারিনি। পরবর্তীতে ঝিলমিলে অ্যাপ্লাই করলে লটারিতে তা পাইনি। ’ আবেদনপত্রটি তিনি শেষ করেছেন পূর্বাচলে একটি প্লটের জোরালো দাবি জানিয়ে। তিনি লেখেন, ‘মা, পূর্বাচলে একটা জমি আমার স্বপ্ন- আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ। আমি আপনার কাছে আবদার করলাম, আপনি আপনার এই সন্তানের আবদার ফেলে দেবেন না আমি জানি (ইনশাআল্লাহ)। ’ ওই আবেদনপত্রে জয়ের ছবির পাশে তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সিলও রয়েছে। সুপারিশকারী হিসেবে তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের স্বাক্ষরও রয়েছে।